আবার বিদ্যুৎ মাসুল প্রতি ইউনিটে বাড়ছে ১০ পয়সা, বিদ্যুৎ চুরিও সমানে চলছে

আজও বিদ্যুৎ পৌছায়নি ১,৩০৭ টি গ্রামে 

গুয়াহাটি : গতকাল ১০ নভেম্বর গুয়াহাটি মহানগরে দেশের ২৪ টি রাজ্যের মন্ত্রীরা জি এস টি কাউন্সিলের বৈঠকে যোগ দিলেন। অথচ এই গুরুত্বপূর্ন দিনেই বেলা দুটাে থেকে আড়াই ঘণ্টারও বেশি সময় মহানগের এক বৃহৎ অঞ্চল লোড শেডিং-এর কবলে পড়েছিল। গ্ৰাম অসমের অবস্থা সহজে অনুমেয়৷ রাজ্য সরকার দাবী করছে রাজ্যে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি ভালো হয়েছে। বিদ্যুৎ মন্ত্রী পল্লব লোচন দাস জানিয়েছেন, রাজ্যের পিকআওয়ারে সর্বোচ্চ বিদ্যুতের চাহিদা ১৬৫০ মেগাওয়াট, সর্বনিম্ন চাহিদা ৮৫০ মেগাওয়াট। যেখানে নিজস্ব উৎপাদন হচ্ছে মাত্র গড়ে ২৭০ মেগাওয়াট। রাজ্যের নােমরূপ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদন করে ১১৯ মেগাওয়াট, লাকুয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদন করে ১৫৭ মেগাওয়াট, কাৰ্বি লাংপি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প উৎপাদন করে ১০০ মেগাওয়াট এবং মিনট্রিয়াং ক্ষুদ্র জলবিদ্যুৎ প্রকল্প উৎপাদন করে মাত্র ৩ মেগাওয়াট। এই চারটি উৎপাদন কেন্দ্রের পুরো বিদ্যুৎ সরকার কাজে লাগাতে পারছেনা। মাঝপথে চুরি হয়ে যাচ্ছে। সরকারী তথ্যে বলছে, ট্র্যান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন লোকসান হচ্ছে ২২.৪৭ মেগাওয়াট। জাতীয় স্তরের এক সংবাদ পত্রে প্রকাশ পেয়েছে, ফিডার লাইন থেকে বিদ্যুৎ লোকসানের ক্ষেত্রে দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ স্থানে আছে রাজস্থান। তার পরের স্থান ক্রমে কেরালা, হারিয়ানা, উত্তর প্রদেশ এবং বিহার। অসমের স্থান সপ্তম। ইন্ট্রিগেটেড পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট স্কীম (আইপি ডি এস) –এর ওয়েবসাইট থেকে কেন্দ্রীয় শক্তি মন্ত্রক দেশের ফিডার লাইনগুলি নিরীক্ষণ করে এই তথ্য পেয়েছে। তার অর্থ হচ্ছে অসমের সরকারী তথ্য বলছে ২২.৪৭ শতাংশ এবং ফিডার লাইন থেকে লোকসান হচ্ছে এক বৃহৎ পরিমান বিদ্যুৎ। অসম সরকারের নিজস্ব প্রকল্পগুলি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা ৩০০ মেগাওয়াটেও দাঁড়াচ্ছে না। মােঝ পথেই চুরি হয়ে যাচ্ছে প্রায় ৩০ শতাংশ বিদ্যুৎ। রাজ্যের বিদ্যুৎ পরিষদ কোনওভাবেই বিদ্যুৎ চুরি বন্ধ করতে পারছে না। গ্রাম অসমের বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যুৎবাহী হাই ভোল্টেজ লাইন থেকে হুকিং করে বিদ্যুৎচুরি হচ্ছে। এছাড়াও মিটার ছাড়াও বিদ্যুৎ ব্যবহারের অভিযোগ আছে। রাজ্যের গরিব মানুষের ঘাড়ে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের বোঝা চাপছে। ভয়ানক খবর হচ্ছে, রাজ্যের বিদ্যুৎ পরিষদ নতুন করে প্রতি ইউনিট ১০ পয়সা করে মাসুল বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছে। তাকে বলা হচ্ছে ইলেকট্রিসিটি ডিউটি মাসুল। বিগত বিধানসভায় অগপ নেতা ফণীভূষণ চৌধুরির এক প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ মন্ত্রী পল্লবালোচন দাস রাজ্যের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে বলে দাবী করে বলেছিলেন, রাজ্যের ২৬,৩৯৫ টি গ্রামের (২০১১-র গণনা) মধ্যে ২৫,০৮৮ টি গ্রামে দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্রামজ্যোতি যোজনায় বিদ্যুৎ পৌছে গেছে। মাত্র ১,৩০৭ টি গ্রামে আজও বিদ্যুৎ পৌছায়নি। তিনি জানান, রাজ্যের বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা ১৬৫০ মেগাওয়াট। অথচ নিজস্ব উৎপাদন ৩০০ মেগাওয়াটও নয়। তিনি এও জানান, ন্যাশানেল গ্ৰীড থেকে গড়ে প্রতি ইউনিটে ৪.৩২ টাকায় বিদ্যুৎ কিনতে হচ্ছে। রাজ্যের এই শোচনীয় বিদ্যুৎ পরিস্থিতি কবে উন্নতি হবে তা একমাত্র ইশ্বরই বলতে পারেন। কারণ গত ১৫ বছর তরুণ গগৈ নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকারের আমলে ১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের নিজস্ব প্রকল্প গড়ে তুলতে পারেননি।

SHARE THIS

No. 1 Web Media in North-East India. Maintained and Published by Saiyad Bulbul Jamanur Hoque on behalf of Save Media Solution (A unit of SAVE).

0 comments: