পাটনা : বিজেপির সঙ্গে কি দ্বিতীয় দফায় সম্পর্ক ছেদ করতে চলেছে জেডিইউ? জাতীয় রাজনীতিতে ফের একবার এই প্রশ্ন নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। কারণ বিজেপির বেশ কিছু সিদ্ধান্তে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে নীতীশ কুমারের দলের। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও নাকি এই বিষয়টি জানানো হয়েছে বলে খবর। কারণ গত ১৭ মে নীতীশ কুমার জেডিইউ–র একটি প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিলেন সারা অসম ছাত্র ইউনিয়নের প্রচারে। সেখানে মোদি সরকারের নাগরিকত্ব বিলের বিরোধিতায় প্রচারে নেমেছে তাঁরা।
এই প্রস্তাবিত বিলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেশী দেশের নিগৃহীত হিন্দুদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। যার বিরোধিতায় নেমেছে সারা অসম ছাত্র ইউনিয়ন। যাকে সমর্থন করেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। এমনকী তিনি বলেছেন, কেন্দ্রের সরকার যদি সংসদে এই বিল নিয়ে আসে তাহলে জেডিইউ প্রথম বিরোধিতা করবে। ফলে সম্পর্কে চিড় ধরতে শুরু করেছে বিজেপি–জেডিইউ জোটে বলে মনে করা হচ্ছে।
আবার গত ২৬ মে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘আমি নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছিলাম।
কিন্তু তাতে জনগনের কি লাভ হল? পরিবর্তে ক্ষমতাশালী কিছু ব্যক্তি নিজেদের নগদ ঠিক অন্যত্র সরিয়ে দিয়েছে। গরিব মানুষকে ভুগতে হয়েছে।’ একইসঙ্গে বিহারের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্যাকেজ দেওয়ার কথা ছিল কেন্দ্রের। তবে সেখানেও পাঁচশো কোটি টাকা কেন্দ্র কম দিয়েছে বলে অভিযোগ বিহার সরকারের। নীতীশ কুমারের এই পদক্ষেপ জোট বিরোধী বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। তবে কেন এই বেসুরো বার্তা তা নিয়ে কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি নীতীশ কুমারের তরফে।
অন্যদিকে দু’দিন আগে ২৯ মে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী একটি পোস্ট করেন টুইটারে। তা নিয়েও বেশ ঝড় উঠে যায় জোটের অন্দরে। সেখানে তিনি লিখেছিলেন, ‘বিহার হল পিছড়ে বর্গদের রাজ্য। তাই অর্থ কমিশনের উচিত বিহারকে পুনর্বিবেচনা করে স্পেশাল স্ট্যাটাস দেওয়া হোক।
এটা বহুদিনের পুরনো দাবি। কিন্তু সেটা দেখা হচ্ছে না’। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে হঠাৎ কেন জোটের বিরুদ্ধে বেঁকে বসছেন নীতীশ কুমার? তাহলে কী জনগনের দাবি আদায় করতে না পারায় নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য এই বেঁকে বসা? ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে জনগনের সমর্থন পেতেই কী নীতীশের এই তাস খেলা? নাকি অন্য কোনও সমীকরণের দিকে তাকিয়ে আজ সম্পর্কে ছেদ ঘটাতে চাইছেন নীতীশ? জাতীয় রাজনীতিতে এই প্রশ্নগুলি এখন ঘুরপাক খাচ্ছে। যার উত্তর দেবে সময়।
0 comments: