প্রটোকলের বেড়াজালে আবদ্ধ : ভারাক্রান্ত বিধানসভার উপাধ্যক্ষ দিলীপ পালের পদত্যাগ

অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি : 
যৌথ সংসদীয় সমিতি (জে পি সি) অসমের বরাকে এসে নাগরিকত্ব সংশােধনী বিল সম্পকে গণ শুনানি গ্রহণ করার সময়ই শাসক দল বিজেপিকে ধাক্কা দিলেন শিলচরের বিজেপি বিধায়ক দিলীপ পাল। আজই প্রকাশ্যে নয় সােসাল মিডিয়ার মাধ্যমে তাঁর আকস্মিক পদত্যাগের কথা জানান। আজ ছিল তাঁর ৩৮ তম বিবাহ বার্ষিকী। আজ শুভদিনে কামাখ্যাধামে গিয়ে মায়ের আশীর্বাদ গ্রহণের পরও প্রকাশ্যে কিছু বলেন নি। 
অসম বিধানসভার উপাধ্যক্ষ দিলীপ পাল গত কয়েকমাস ধরে বিভিন্ন কারণে বিজেপি নেতৃত্বের ওপর অসন্তুষ্ট ছিলেন। আজ বিধানসভায় তাঁর চেম্বারে উপাধ্যক্ষ পালের সঙ্গে কথাবার্তা বলার সময় এই প্রতিবেদকের কাছে ঘূণাক্ষরেও আভাস দেন নি, তিনি পদত্যাগ করবেন। তবে তিনি বলেছিলেন আজ এক বড় খবর পাবেন। তিনি মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনােয়ালকে বার বার তাঁর পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করে নানা ক্ষোভের কথা জানিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী কোনও গুরুত্বই দেন নি। 
মুখ্যমন্ত্রীকে বরাক উপত্যকায় সুপারি, কয়লা প্রভৃতি ক্ষেত্রে নানা দুর্নীতির অভিযােগ করে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানিয়েছিলেন। কিন্তু দুর্নীতি নিয়ে শূন্য সহনশীলতার কথা বলা বিজেপি নেতৃত্ব বরাক উপত্যকায় দুর্নীতি প্রতিরােধ করতে পারে নি বলে তার মনে ক্ষোভ ছিল। ২৩ মাস ৬ দিন ক্ষমতায় থাকা উপাধ্যক্ষ পাল সােসাল মিডিয়াই জানিয়েছেন, উপাধ্যক্ষের দায়িত্ব নিয়ে তিনি ভারাক্রান্ত। নাগরিকত্ব সংশােধনী বিল নিয়ে শিলচরের মানুষ নানা প্রশ্ন করছিলেন। প্রকৃত ভারতীয় নাগরিক হওয়া সত্বেও অনেককে এন আর সি কোপের মুখে পড়তে হয়েছে। সে ব্যাপারেও সন্তুষ্ট ছিলেন না উপাধ্যক্ষ। 
বিধানসভার উপাধ্যক্ষের প্রটোকলের বেড়াজালে আবদ্ধ ছিলেন, আম জনতার সঙ্গে স্বছন্দে মেলামেশা করতে পারতেন না, প্রাণ খুলে কথা বার্তা বলার ক্ষেত্রেও নানা প্রটোকলের বিধি নিষেধ ছিল। নিজেকে সব সময় ভাবতেন খাঁচায় আবদ্ধ পাখী। স্বচ্ছ, সৎ ভাবমূর্তি থাকা দিলীপ পাল বরাক উপত্যকার নানা দুর্নীতিতে জড়িত দলীয় সদস্যদেরকেও তিনি ছাড় দিতেন না। 
আজ পারিবারিক সূত্রে জানা গেল উপাধ্যক্ষ দিলীপ পাল বিধানসভার অধ্যক্ষ হীতেন্দ্র নাথ গােস্বামীর কাছে আগেই পদত্যাগ পত্র দাখিল করেছিলেন। মন্ত্রীসভার সম্প্রসারণের সময় ঘনিষ্ট মহলের কাছে আশা প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সােনােয়াল তাকে উপাধ্যক্ষের মতাে গুরুত্বহীন পদ থেকে সরিয়ে কেবিনেট মন্ত্রীর পৰ্য্যায় উন্নিত করে পুরস্কৃত করবেন। এ ছাড়া তার এক ভাইকে ডি ভােটারের বদনামে অভিযুক্ত করায় ক্ষোভ ছিল মনে। শুধু দু একটি নয় বিভিন্ন কারনে উপাধ্যক্ষ দীলিপ পাল পদত্যাগ করেন। আজ পদত্যাগ ঘােষণা করেই দিল্লী উড়ে যান। রাকের বিজেপি নেতৃত্ব বড় ধাক্কা খেল।

SHARE THIS

No. 1 Web Media in North-East India. Maintained and Published by Saiyad Bulbul Jamanur Hoque on behalf of Save Media Solution (A unit of SAVE).

0 comments: