কানহাইয়াদের জরিমানা বহাল, উমরের বহিষ্কারও

দিল্লি : উমর খালিদের বহিষ্কার ও কানহাইয়া কুমারদের আর্থিক জরিমানার সিদ্ধান্ত বহাল রাখল জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি। ২০১৬–‌এ‌র ৯ ফেব্রুয়ারি‌র ঘটনার জন্য এঁদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা রুজু হয়েছিল। তার পাশাপাশি জেএনইউ–‌‌এর একটি প্যানেল উমর ও কানহাইয়া–‌সহ বেশ কিছু ছাত্রের বিরুদ্ধে বহিষ্কার বা জরিমানার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। দিল্লি হাইকোর্টের নির্দেশে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য বিষয়টি পাঠানো হয়েছিল জেএনইউ–‌‌এর ৫ সদস্যের উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটিতে। 
আজ কমিটি পুরনো সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছে। তবে, জেএনইউ সূত্রের খবর, প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় উমর খালিদ ও কানহাইয়াদের শাস্তি যা ছিল, তাই রাখা হয়েছে। তবে, অন্য কয়েকজন ছাত্রছাত্রীর আর্থিক জরিমানার পরিমাণ কিছুটা কমানো হয়েছে। এদিনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আবারও আদালতে যাওয়ার কথা ভাবছেন অভিযুক্ত ছাত্রছাত্রীরা। আইসা নেত্রী, জেএনইউ ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সভানেত্রী সুচেতা দে ‘‌আজকাল’‌কে বললেন, ‘‌উচ্চ পর্যায়ের কমিটির নামে ২০১৯–‌‌এর আগে আবারও জেএনইউ নিয়ে নোংরা রাজনীতি করতে চাইছে বিজেপি। নির্বাচনের গিমিক। কয়েকটি বিজেপি–‌‌র মদতপুষ্ট সংবাদমাধ্যমকে ব্যবহার ‌করে জেএনইউ–‌‌এর ছাত্র রাজনীতির কোমর ভেঙে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। মিথ্যা অভিযোগে ছাত্রদের বহিষ্কার ও আর্থিক জরিমানা তার সূত্রপাত। তবে, বামপন্থী ছাত্রছাত্রীরা এতে ভয় পাবেন না। 
এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আবারও আদালতের দ্বারস্থ হবেন ছাত্রছাত্রীরা।’‌ সুচেতা আরও বলেন, ‘‌এই জরিমানা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কিছু প্রমাণ করার ষড়যন্ত্র। মেকি ভিডিও–‌‌র কথা সবাই জানেন। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই জেএনইউ–কে ‘‌টার্গেট’‌ করা হয়েছে। এতে লিপ্ত হয়েছেন খোদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর। তিনি সঙ্ঘের ঘনিষ্ঠ হিসেবেই ‌পরিচিত।’‌ এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রীর বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আদালতের নির্দেশ মেনেই কাজ করেছেন জেএনইউ কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে বেশি কিছু বলতে চাই না।’‌ দেশদ্রোহী স্লোগান ও জেএনইউ–‌‌এর শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ২০১৬ সালে জেএনইউ–‌‌এর এক প্যানেল উমর খালিদকে বহিষ্কার এবং তৎকালীন ছাত্র সংসদের সভাপতি কানহাইয়া কুমারের ১০ হাজার টাকা জরিমানার সুপারিশ করে। একইসঙ্গে অনির্বাণ ভট্টাচার্য–‌‌সহ ১৪ জন ছাত্রছাত্রীর আর্থিক জরিমানার সুপারিশ করেছিল সেই প্যানেল। ওই কমিটির সিদ্ধান্তকে জেএনইউ ছাত্র সংসদ তো বটেই, শিক্ষক সংগঠনও খারিজ করে দিয়েছিল। সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে গিয়েছিলেন অভিযুক্ত ছাত্ররা। 
হাইকোর্ট জেএনইউ–‌‌কে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য উচপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গড়ার নির্দেশ দিয়েছিল। ছাত্রদের বিরুদ্ধে মূলত অভিযোগ ছিল, তাঁরা সংসদ হামলায় দোষী সাব্যস্ত আফজল গুরুর ফাঁসির বর্ষপূর্তিতে (‌৯ ফেব্রুয়ারি)‌ জেএনইউ চত্বরে একটি কর্মসূচি পালন করেছিলেন ও সেখানে ‘‌দেশবিরোধী স্লোগান’‌ দিয়েছিলেন। বিতর্কিত কর্মসূচির জেরে ‘‌দেশদ্রোহিতা’‌র অভিযোগে গ্রেপ্তার করে জেলে ঢোকানো হয়েছিল উমর খালিদ, কানহাইয়া কুমার ও অনির্বাণ ভট্টাচার্যদের। পরে তাঁরা জামিনে মুক্তি পান। ২৩ দিন জেলবন্দি থাকার পর হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছিলেন কানহাইয়া কুমার। তারপর সেশন কোর্টও তাঁর জামিন মঞ্জুর করে। তারপর থেকে এই মামলা মোটামুটি ধামাচাপা ছিল। দিল্লি পুলিসের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও চার্জশিট দাখিল করা হয়নি। মামলাটি দিল্লি পুলিসের বিশেষ বিভাগের কাছে রয়েছে। এখনও দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য আদালতের অনুমতি নিতে হয় কানহাইয়াকে।‌‌

SHARE THIS

No. 1 Web Media in North-East India. Maintained and Published by Saiyad Bulbul Jamanur Hoque on behalf of Save Media Solution (A unit of SAVE).

0 comments: