লামিডং : মধ্য অসমে বাঙালি প্রধান রেলওয়ে শহর লামডিঙে প্ৰায় দু লক্ষাধিক মানুষের বাস। দেড়শো বছরের পুরনো রেলওয়ে শহরের জীবন শুরু হয় রেলওয়ে কর্মকাণ্ডকে ঘিরে। রেলের প্রধান কাৰ্যালয় ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার (ডি আর এম) কাৰ্যালয়ের অধীনে লামডিঙের হাজার দশেক কর্মচারী কাজ করতেন। ক্রমশঃ ডি আর এম কার্যালয়কে সন্ধুচিত করে কর্মচারী ট্রান্সফার অব্যাহত। রেলকে কেন্দ্র করে লামডিঙের ব্যবসা-বাণিজ্য ক্রমশঃ নিম্নমুখী। সংস্কৃতি প্রধান ‘জলহীন শহর’ লামডিঙে হাজারো সমস্যা। স্বাধীনতার পর থেকে কোনও সমস্যাই সমাধান হলো না। লামডিং একজন মন্ত্রীকে পেয়েছিল। বর্তমান কেন্দ্রীয় রেলওয়ে মন্ত্রী রাজেন গোঁহাইর প্রধান ভোেটররা হচ্ছে লামডিঙের মানুষ কিন্তু তার পরও লামডিঙে ডি ভোটারের সন্ত্রাস থেকে মুক্ত হতে পারলো না। লামডিঙের কয়েকশো স্থানীয় নাগরিকের নামে ডি ভোটারের নোটিস ইসু করা হয়েছে।
লামডিঙের বিশিষ্ট সমাজকর্মী এবং অগপ-র নগাঁও জেলার প্রাক্তন সহকারী সাধারণ সম্পাদক তাপস দাস ব্যক্তিগত উদ্যোগ নিয়ে ডি ভোটারদের মামলাগুলি নিয়ে লড়ছেন। তিনি আজ অভিযোগ করেন, সীমান্ত পুলিশের একাংশ কমী পয়সা-কড়ির জন্য দারিদ্র পীড়িত সাধারণ লোককে বিদেশি নোটিশ দিয়ে হয়রানি করছে। ভারতীয় নাগরিকত্বের সব ধরণের নথি-পত্র থাকা সত্বেও নানাভাবে গরিব লোকগুলোকে হেনস্থা করা হচ্ছে। তিনি বলেন লামডিঙের কোনও নেতা নেই, যে এই দারিদ্র পীড়িত লোকগুলোর জন্য লড়াই করেন। তার দাবী, লামডিঙের ৯০ শতাংশ মানুষ বিজেপিকে ভোট দিয়েছে। অথচ সেই বিজেপি সরকারের পুলিশ ভারতীয় নাগরিকদের হয়রানি করছে। তিনি ছন্দা পাল নামের এক দুই সন্তানের জননীর কথা উল্লেখ করে বলেন, লামডিঙে জন্ম-কর্ম, স্বামী দুলাল পাল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, বাবা সুকুমার পাল। ছন্দা পালের ভাইয়েরা আছে। তাদেরকে বাদ দিয়ে ছন্দা পালকেই বিদেশি সাজিয়ে তেজপুরের ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হলো। এর কি অর্থ ! এত বড় অন্যায় হওয়ার পরও লামডিঙের নেতা-নেত্রীরা বিস্ময়করভাবে নিশ্চুপ। একইভাবে রেলওয়ে কর্মচারী লামডিঙে জন্মগ্রহণকারী রুই দাস বসাককেও বিদেশি নোটিশ দেওয়া হয়। তিনি প্রধান মন্ত্রীর দফতরে এই সম্বন্ধে চিঠি পাঠান যদিও কোনও সুরাহা হয়নি।
হােজাই ও যমুনামুখ এবং লামডিঙের ১৪৬৮ জনকে বিদেশি নোটিশ ইস্যু করা হয়েছে। অত্যন্ত দারিদ্র পীড়িত লোকগুলো এই নোটিশ পেয়ে উপায়হীন হয়ে তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিক্ৰী করে কৰ্পদক শূণ্য হয়ে পড়ছে৷ তাদের সাহায্যে কোনও জননেতা এগিয়ে আসছে না৷
0 comments: