গুয়াহাটি : শিলাদিত্য দেব হােজাই নির্বাচন কেন্দ্র থেকে ‘হাই প্রোফাইল’ কংগ্রেস নেতা একাধিক সময়ের ক্যাবিনেট মন্ত্রী ডাঃ অর্ধেন্দু কুমার দে’কে গোহারাভাবে হারিয়ে বিজেপির টিকিটে বিধান সভায় এসেছেন। ৬১ জন বিজেপি বিধায়কদের মধ্যে ব্ৰহ্মপুত্ৰ উপত্যকার একমাত্র বাঙালি হিন্দু প্রতিনিধি। দেব আজ এক বিতর্কিত মুখ। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল অনেক সময় তার উপর অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তার পরও কিন্তু শিলাদিত্যর মুখ বন্ধ করা যায়নি। রাজ্যের বৃহত্তম জনগোষ্ঠী মুসলিম সম্প্রদায় সম্পর্কে আপত্তিকর নানা মন্তব্য করায় তাকে নানা সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে। এই শিলাদিত্য দেব ডিটেনশন ক্যাম্পে গিয়ে বন্দীদের হাতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে অনেকের বিরাগভাজন হয়েছিলেন। তার পরও তিনি ক্ষান্ত হননি। লাগাতারভাবে মুসলিম বিরোধী মন্তব্য করার পেক্ষিতে ফিলিপাইনস এবং ব্রিটেন থেকে টেলিফোনে হুমকি পেয়েছেন শিলাদিত্য। শিলাদিত্য নিজেই এই অভিযোগ করে বলেছেন, রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার প্রেক্ষিতে কোনও জেহাদি গ্রুপ তাকে টেলিফোনে হুমকি দিয়েছে। আজ দিসপুর থানায় এই সম্পর্কে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, “রাজ্যের মুসলিম জনগোষ্ঠীর মাত্র ২-৩ শতাংশ ছাড়া বাকি সবাই বাংলাদেশী। মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ নিজেদের বাড়িতে বাংলায় কথা বলেন আর বাইরে অসমীয়া গামছা গলায় পরে অসমীয়া কথা বলে নাটক করেন। আমার যদি ও আই-র দরকার না পরে, তবে কেন তাদের দরকার। রাজ্যের চরাঞ্চল সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটি। রাজ্য সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা চরাঞ্চলের উন্নয়নের নামে ব্যয় করছে। কিন্তু সেই টাকায় সেখানে চোরা চালান, নারী পাচার ও জঙ্গি কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। রহিঙ্গা মুসলিমদের এদেশে আশ্রয় দানের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু সেই রোহিঙ্গারা ত্রিপুরা সীমান্ত দিয়ে বরাক উপত্যকার পাথারকান্দিতে আশ্রয় নিচ্ছে।” এই ধরণের অনেক আপত্তিকর মন্তব্য করার প্রেক্ষিতে বিজেপির রাজ্যিক উপ-সভাপতি তৌফিক রহমান, কংগ্রেস বিধায়ক আব্দুল খালেক, এআইইউডিএফের বিধায়ক আমিনুল ইসলাম, আনােয়ার লস্কর প্রমূখ তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্তি করেছেন। বিধায়ক আমিনুল ইসলাম বিধানসভার অধ্যক্ষের কাছে শিলাদিত্যর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিধায়ক আব্দুল খালেক অভিযোগ করেছেন বাংলা ভাষা বললেই যদি বাংলাদেশী, তাহলে শিলাদিত্য নিজেই একজন বাংলাদেশী।
বিদেশ থেকে জেহাদিদের হুমকির প্রেক্ষিতে বিজেপি বিধায়ক শিলাদিত্য দেব থানায় এজাহার দাখিল করেছেন। এই সম্পর্কে তার মতামত জানার জন্য বার-বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। এদিকে তার ঘনিষ্ঠ সূত্রই জানাচ্ছে বিধায়ক শিলাদিত্য রাজ্যের প্রকৃত ভারতীয় নাগরিক মুসলিমদের সম্পর্কে কোনও আপত্তিকর মন্তব্য করেননি। একাংশ সংবাদ মাধ্যমে তার মন্তব্যর ভুল বাখ্যা করা হচ্ছে।
0 comments: