অগণতান্ত্রিকভাবে দল চালাচ্ছেন সুপ্রিমো বদরুদ্দিন আজমল
গুয়াহাটি : সাংসদ বদরুদ্দিন আজমলের নেতৃত্বাধীন এআইইউডিএফ দলের ভাবমূর্তি ক্রমশঃ হ্রাস পাচ্ছিল। রাজ্যের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর আশা-আকাঙ্খা পূরণে এবং বিভিন্ন দাবী-দাওয়া উত্থাপনে বিধানসভার ১৮জন বিধায়কের ভূমিকা সন্তোষজনক নয়। দলের সুপ্রিমো বিজেপি দলের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রতিটি নির্বাচনে সাধারণ সদস্যদের কাছে থেকেও টিকিট দেওয়ার বিনিময়ে লক্ষ লক্ষ টাকা দাবী করা হচ্ছিল। সম্পূর্ণ পারিবারিক স্বাৰ্থ এবং ব্যক্তিগত ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন সুপ্রিমো। দলের মধ্যে কোনও গণতন্ত্র নেই— এই ধরণের নানা অভিযোগে দলের আভ্যন্তরে গুঞ্জন উঠেছিল।
আজ দলের অন্যতম স্থপতি এবং বলিষ্ঠ মুখ বরপেটার প্রাক্তন বিধায়ক তথা দলের সাধারণ সম্পাদক, মুখপাত্র, কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক আব্দুর রহিম খান সাংবাদিক সন্মেলন ডেকে দল ত্যাগের কথা ঘোষণা করে দলের আভ্যন্তরীণ নিয়ে মুখ খুললেন। তিনি সরাসরি বদরুদ্দিন আজমলের দিকে তির ছুড়ে অভিযোগ করলেন, দুনীতি সঙ্গে জড়িয়েছেন দলের সুপ্রিমো। রাজ্যের হত দরিদ্র মুসলিম জনগোষ্ঠীর নানা সমস্যা, ডি ভোটার, ডিটেশন ক্যাম্প, এন আর সির মতো জটিল সমস্যা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিজের ব্যবসায়ী সাম্রাজ্য রক্ষা করার জন্য দিল্লী, মহারাষ্ট্র প্রভৃতি রাজ্যে ঘুরে বিজেপির সঙ্গে গোপন বুজাবুজিতে লিপ্ত হয়েছেন। দলীয় টিকিট দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপক অর্থের লেনদেন হয়েছিল। শীর্ষ নেতৃত্ব দলীয় প্রার্থীদের অর্থের বিনিময়ে তাবিজ কেনার পরামর্শও দিয়েছিলেন।
বারপেটা লোকসভার সাংসদ সিরাজউদ্দিন আজমল একপক্ষীয় উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে দলটিকে পরিচালনা করছেন। দলটি একবারে নিঃশেষ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। স্বয়ং সাংসদ ডেপুটি কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে সাংসদ এলেকা উন্নয়ন তহবিলে ১৫শতাংশ হারে টাকা কেটে রাখার জন্য প্রস্তাব দিয়েছেন। যা জনপ্রতিনিধির জন্যে খুবই দুভাগ্যজনক। এআইইউডিএফ দলটি বর্তমানে আজমল ফাউণ্ডেশনের একটি শাখা হিসেবে কাজ করছে। দলের মধ্যে কোনও গণতন্ত্র নেই। সাংবিধানিক প্রক্রিয়া মেনে দলটি পরিচালনা করা হচ্ছে না। সুপ্রিমো খেয়ালখুশি মতো অগণতান্ত্রিকভাবে দল পরিচালনা করছে। নিষ্ঠাবান, সৎ কমীরা হাত গুটিয়ে বসে গেছেন। বিটিএডিতে সাংগঠনিকভাবে দলকে শক্তিশালী না করে কোনও কোনও নির্বাচন কেন্দ্ৰে অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে গোপন বুজাবুজিতে লিপ্ত হয়েছে। যার ফলে লাভবান হয়েছে বিজেপি । সুপ্রিমো বদরুদ্দিন আজমল এখন একতন্ত্র চালাচ্ছেন। সামাজিকভাবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ,আইনজীবী,উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তিদের সন্মানজনক স্থানে রাখতে চাইছেন না। এআইইউডিএফের আর কোনও প্রাসঙ্গিকতা নেই। রাজ্যের সংখ্যালঘু মানুষের আশাআকাঙ্খা পূরণে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে দল ত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলাম।
আজ দিসপুর প্ৰেছ ক্লাবে সাংবাদিক সন্মেলনে ইংগিত দিলেন। ভবিষ্যতে কংগ্রেস দলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার। তবে স্পষ্টভাবে কিছু বললেন না। এদিকে রহিম খানের দল ত্যাগের অবহিত পরেই রাজের বিভিন্ন জায়গা থেকে দল ছাড়ার হিড়িক পরে গেছে।
0 comments: