গুয়াহাটি : কেন্দ্রীয় শক্তিমন্ত্রক দেশের রাজ্যগুলিকে জানিয়ে দিয়েছে, যেসব রাজ্যে ট্র্যান্সমিশন এবং ডিস্ট্রিবিউশন লোকসান ১৫ শতাংশের বেশি হবে, তার আর্থিক দায়ভার সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলিকেই বহন করতে হবে। দেশের মধ্যে এই লোকসানের পরিমাণ তামিলনাড়ুতে (১০.১৩ শতাংশ) সবথেকে কম হওয়ার বিপরীতে বিহারে (৪৯.২৯ শতাংশ) সবথেকে বেশি। তুলনামূলকভাবে অসমের লোকসানের পরিমান প্রায় ২৬ শতাংশ। তাই কেন্দ্রীয় সরকার আর্থিক দায়ভার গ্রহণ করবে না। রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী পল্লবালোচন দাস আগেই জানিয়েছেন, ইলেকট্রিসিটি ডিউটি হিসেবে ১০ পয়সা করে প্রতি ইউনিটে দাম বৃদ্ধি করা হবে।
গত ৭ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রীদের সঙ্গে এক বৈঠকে ২০১৯ সালের মধ্যে ২৪ ঘণ্টা প্রতি ঘরে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যে কোনওভাবে বিদ্যুৎ লোকসান বন্ধের উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থাগুলি দুইভাবে আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছে। একটি হচ্ছে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে গিয়ে বিদ্যুৎ চুরি, সংবহনজনিত ক্ষতি ইত্যাদি। অন্যটি হচ্ছে ভুল মিটার রিডিং, বিল আদায় না হওয়া, পুরনো যন্ত্রাংশ, দীর্ঘদিন রক্ষণা-বেক্ষনের অভাব, মাইলের পর মাইল দীর্ঘ লাইন, পুরনো সাব-ষ্টেশন, পুরণো পরিকাঠামো প্রভৃতির জন্য বিদ্যুৎ সংস্থাগুলি লোকসানের মুখে পড়েছে। অসমের ক্ষেত্রে লোকসানের অন্যতম কারণ বিভিন্ন হাই ভল্টেজ লাইনগুলি থেকে বে-আইনিভাবে হুকিং করে বিদ্যুৎ চুরি, বিনা ট্রান্সফর্মারে বিদ্যুৎ ব্যবহার। এছাড়াও ছােট-খাট কোম্পানী এমনকি রাষ্ট্ৰীয়াত্ব সংস্থা এবং সরকারও কোটি কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বাকী রাখে।
গত ১৫ বছর কংগ্রেস সরকারের আমলে রাজ্যে এক ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদেনর কোনও প্রকল্পই নির্মাণ করা হয়নি। বিদ্যুৎ মন্ত্রী পল্লব লোচন দাস জানিয়েছেন, রাজ্যের পিক আওয়ারে সর্বোচ্চ বিদ্যুতের চাহিদা ১৬৫০ মেগাওয়াট, সর্বনিম্ন চাহিদা ৮৫০ মেগাওয়াট। যেখানে নিজস্ব উৎপাদন হচ্ছে মাত্র গড়ে ২৭০ মেগাওয়াট। রাজ্যের নােমরাপ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদন করে ১১৯ মেগাওয়াট, লাকুয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদন করে ১৫৭ মেগাওয়াট, কাবিলাংপি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প উৎপাদন করে ১০০ মেগাওয়াট এবং মিনট্রিয়াং ক্ষুদ্র জলবিদ্যুৎ প্রকল্প উৎপাদন করে মাত্র ৩ মেগাওয়াট।
0 comments: