নিষিদ্ধ সংগঠন আলফা চেয়ারম্যানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ বিধায়ক আনোয়ার হােসেন লস্কর : বিজেপি সরকারের প্রতি নরম স্থিতি
গুয়াহাটি : পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি জাতীয় নাগরিক পঞ্জী (এন আর সি)র বৈষম্যমূলক কাজের সমালোচনা করে অসমের বাঙালিকে তাড়াতে চাইছে বলে বিস্ফোরক অভিযোগ কে কেন্দ্র করে সারা রাজ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বরাক উপত্যকার বিজেপি ছাড়া সমগ্র বরাকবাসী মমতার মন্তব্যের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে। বরাকের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ নাগরিক সভা ডেকে পৃথক বরাকের ডাক দেওয়ার প্রস্তুতি চালাচ্ছে। আগামী ১৬ জানুয়ারি গণ মিছিলের ডাক দিয়েছে ইউনিয়ন টেরিটরি ডিমান্ড কমিটি। বরাকের সাংসদ সুস্মিতা দেব, প্রাক্তন মন্ত্রী সিদ্দেক আহমেদ, বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ প্রমুখদের মন্তব্যের প্রতিবাদ করেছেন হাইলাকান্দির এআইইউডিএফ বিধায়ক আনোয়ার হােসেন লস্কর। তিনি রবিবার দিশপুর প্রেস ক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে পশ্চিম বঙ্গর মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে বলেন, তার কোনও অসম সম্পর্কে ধারণাই নেই। সুপ্রিম কোর্টের তত্বাবধানে এন আর সির কাজ চলছে। সে কথা জানেই না মমতা ব্যনার্জি। বরাক উপত্যকার মানুষ আদি বাসিন্দা। তারা কাছাড়ি। পরবর্তী তালিকায় তাদের নাম উঠবে। বলে আশা করেন। এদি্কে আলফা চেয়ারম্যান পরেশ বরুয়ার প্ৰশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে লস্কর বলেন, তিনি কি করছেন বা করেন, তা জানার প্রয়োজন নেই। ভারতীয় হিসেবেই তার নাম এন আর সিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কমলাক্ষ পুরকায়স্থরা অভিযোগ করেছিলেন, দেশদ্রোহী আলফা চেয়ারম্যানের নাম উঠবে এন আর সিতে। অথচ তাদের নাম নেই। তা কি করে হতে পারে?
হাইলাকান্দি জেলার ব্যাপক দুনীতির প্রসঙ্গ তুলে বিগত কংগ্রেস শাসনে বরাকের প্রাক্তন মন্ত্রীদের দুনীতিমূলক কাজ-কর্ম তুলে ধরে অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করার দাবী জানান। হাইলাকান্দির প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম রায়ের নাম উল্লেখ না করে বিধায়ক লস্কর অভিযোগ করেন, হাইলাকান্দি জেলায় গত ১৫ বছরে জনস্বাস্থ্য কারিকরী বিভাগ এক বিন্দুও পানীয় জলের ব্যবস্থা করতে পারেনি। লক্ষ লক্ষ টাকার দুনীতি করেছে। তিনি হাইলাকান্দি জেলার এনরেগা, আই এ ওয়াই প্রভৃতি গ্রাম পঞ্চায়তের অধীনের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ কর্মের কোটি কোটি টাকার দুৰ্নীতির অভিযোগ তুলে বলেন, রবীন চন্দ্ৰ দাস, চয়ন দত্ত, অসীম ভট্টাচার্য প্রমুখ বিভিন্ন পদে কাজ করা সরকারী অফিসারদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে তাদের কাছ থেকে আত্মসাৎ করার টাকা ঘুরিয়ে নেওয়ার দাবী জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আহ্বান জানান। বর্তমান সরকারের প্রতি নরম স্থিতি গ্রহণ করে বিগত ১৫ বছরের গগৈ আমলের সরকারের কোটি কোটি টাকা দুৰ্নীতির অভিযোগে ফেটে পড়েন। তিনি বলেন, ইন্দিরা আবাস যোজনা যে সংখ্যক ঘর বানিয়ে টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে, সেই সংখ্যক ঘরই নেই হাইলাকান্দি জেলায়। যে ঘরগুলি বানানো হয়েছে, কোনও ঘরে শৌচালয় নেই। নিজেদেরে ঘরকেও ইন্দিরা আবাস যোজনা বানিয়ে সরকারী টাকা লুট করা হয়েছে। হাইলাকান্দি জেলায় বহু উন্নয়নমূলক কাজ করার দাবী জানিয়ে এআইইউডিএফ বিধায়ক বলেন, এমন কয়েকটি রাস্তা-ঘাট তৈরি করে দিয়েছি, যা বিগত ৫০-৬০ বছরে কেউ করেনি। দুৰ্নীতির প্রামাণ্য নথি-পত্ৰ দেখিয়ে অভিযোগ করেন, হাইলাকান্দি জেলার এক একটি ব্লকে ১৮-২০ কোটি টাকার দুনীতি হয়েছে। এই ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীকে অবগত করা হয়েছে। আসন্ন বিধানসভাতে বিষয়টি তিনি উত্থাপন করবেন বলে বিধায়ক লস্কর জানান।
0 comments: