শিলচর : অবহেলিত দক্ষিন অসমের বরাক উপত্যকার দিকে দৃষ্টি ঘূরেছে পৰ্যটন বিভাগের৷ নমামি বরাক উৎসবের পর এই অবহেলিত অঞ্চেলর প্ৰতি দেশ-বিদেশের দৃষ্টি আকৰ্ষণের লক্ষ্যে বরাক উপত্যকার শনবিল অঞ্চলকে অবশেষে পর্যটনস্থলের মর্যাদা দিতে চলেছে সরকার৷ বৈজ্ঞানিক ও সামাজিকভাবে এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম জলাশয় শনবিলকে পর্যটনস্থল বা পর্যটনকেন্দ্রে গড়ে তোলার দাবিতে দীর্ঘদিন থেকে প্রচেষ্টা চলছে। কিন্তু বিগত রাজ্য কিংবা কেন্দ্রীয় সরকার এতদিন এ বিষয়ে কোনও সদিচ্ছার লক্ষণ দেখায়নি।
এবার একজন সাংবাদিকের প্রচেষ্টায় অন্তত রাজ্য সরকার ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। মাস দুই আগে জাতীয় স্তরের বহুভাষিক সংবাদ সংস্থা হিন্দুস্থান সমাচার-এর নিউজ কো-অর্ডিনেটর সমীপ কুমার দাস করিমগঞ্জ জেলার অন্তর্গত এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম জলাশয় শনবিল সম্পর্কে রাজ্য পর্যটন উন্নয়ন নিগম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন। হাইলাকান্দি জেলার লালা থেকে প্রকাশিত সাহিত্য পত্র প্রবাহ-এর সম্পাদক আশিসরঞ্জন নাথের কাছে ফোনে সমীপ বাবু শনবিল সম্পর্কে প্রকাশিত কয়েকটি সংস্করণ প্ৰকাশ করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রবাহ-এর ২০১৩ সালে প্রকাশিত 'বরাকের অবহেলিত জলসম্পদ' শীর্ষক সংখ্যা সাংবাদিক সমীপকুমার দাসের কাছে পাঠান আশিস নাথ।
তথ্যসূত্র সংবলিত প্রবাহ-এর সংস্করণগুলি সমীপবাবু অসম পর্যটন উন্নয়ন নিগমের উপাধ্যক্ষ নবদ্বীপ কলিতার হাতে তুলে দেন।
বরাকে যে এত বিশাল জলাশয় রয়েছে নবদ্বীপবাবু এ সূত্রেই প্রথম অবহিত হয়ে তিনি বিষয়টি নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। সমীপবাবুর সঙ্গে তিনি বিস্তারিত আলোচনা করে প্রয়োজনীয় অংশগুলো অসমিয়া ভাষায় অনুবাদ করিয়ে নেন। এর পর এ বিষয়ে পর্যটন উন্নয়ন নিগমের অধ্যক্ষ জয়ন্তমল্ল বরুয়া এবং মন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মার সঙ্গে আলোচনায় বসেন।
জয়ন্তমল্লরাও এ বিষয়ে এই প্রথম অবহিত হন এবং আগ্রহ প্রকাশ করে নবদ্বীপ কলিতাকে শনবিল পরিদর্শনে পাঠান। সে অনুযায়ী নমামি বরাক উৎসবের পরের দিন ২১ নভেম্বর নবদ্বীপবাবু শনবিল পরিদর্শন করতে যান। তারই ভিত্তিতে তিনি এক প্রকল্প তৈরি করে জয়ন্তবাবুর কাছে পেশ করেন। উভয়ে আলোচনা করে তা কেন্দ্রীয় সরকারের পর্যটন উন্নয়ন দফতরে পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় অনুমোদনের আবেদন জানান।
দিল্লি থেকেও আশানুরূপ সাড়া মেলে। কেন্দ্রের পর্যটন উন্নয়ন মন্ত্রক থেকে শনবিল সম্পর্কে এক প্রদর্শনীমূলক আলোচনার জন্য রাজ্যের পর্যটন উন্নয়ন বিভাগের উপাধ্যক্ষ ও অধ্যক্ষকে দিল্লি ডেকে পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্র নির্ধারিত তারিখ ১১ জানুয়ারি দিল্লিতে তাঁদের শনবিল বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হবে। রাজ্য পর্যটন নিগমের দৃঢ় বিশ্বাস কেন্দ্রীয় সরকারের পর্যটন উন্নয়ন মন্ত্রক এ ব্যাপারে সবুজ সংকেত তাঁরা লাভ করতে সমর্থ হবেন। তা-ই যদি হয়, তা হলে বরাক উপত্যকার দীর্ঘদিনের এক গণদাবি পূরণ হতে পারে বলে আশা ব্যক্ত করেছেন রাজ্য পর্যটনের উপাধ্যক্ষ নবদ্বীপ কলিতা।
0 comments: