রাজ্যে অনুপ্রবেশকারীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে এ আই ইউ ডি এফ

অসম দখলের লক্ষ্যে পাকিস্তান ছায়া যুদ্ধ চালাচ্ছে বলে বিস্ফোরক অভিযােগ সেনাপ্রধান রাওতের 

গুয়াহাটি : এক সাংবিধানিক প্রধান অসমের অবৈধ অনুপ্রবেশ নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে দীর্ঘ প্রতিবেদন পাঠিয়ে রাজ্যে এক বিতর্কের সৃষ্টি করেছিলেন, বুধবার আর এক সাংবিধানিক প্রধান অসম তথা উত্তর পূর্বাঞ্চলের অবৈধ অনুপ্রবেশ সম্পর্কে বিস্ফোরক অভিযােগ করে, রাজ্য রাজনীতি তাে বটেই রাষ্ট্রীয় রাজনীতিতে ঝড় তুললেন। সাধারণত দেশের সেনা প্রধানরা আভ্যন্তরীন রাজনীতি নিয়ে মুখ খােলেন না, বর্তমান দেশের সেনা প্রধান বিপিন রাওয়াত এক অনুষ্ঠানে অসমের একমাত্র সংখ্যালঘু জনগােষ্ঠীর রাজনৈতিক দল বদরুদ্দিন আজমলের নেতৃত্বাধীন এ আই ইউ ডি এফ কে বিধে অবৈধ বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের প্রশ্রয়দাতা বলে সরাসরি অভিযােগ তুললেন।’ ‘সেনাপ্রধান অভিযােগ করেছেন পাকিস্তান সরকার উত্তর পূর্বাঞ্চলকে দখল করার লক্ষ্যে ছায়া যুদ্ধ চালাচ্ছে। 
চীন সরকারেরও সমর্থন আছে। বাংলাদেশীদের প্রশ্রয়দাতা এ আই ইউ ডি এফের সংগঠন বিজেপি থেকেও দ্রুত গতিতে বাড়ছে। এই দলের দুইজন সাংসদ, জনসংঘ-এরও তা ছিল না। সেনাপ্রধান রাওয়াতের আরও অভিযােগ ১২১৮সাল থেকে ১২২৬ সাল পর্যন্ত মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ এ অঞ্চলে বসতি স্থাপনের জন্য আসে, সেই সময় আহােমরাও এ অঞ্চলে এসেছিল। বর্তমান বাংলাদেশে জনবিস্ফোরণ, জমির অভাব,বাৎসরিক বন্যায় ছিন্নমূল অবস্থার জন্য অসমে প্রবেশ করছে। অসমের ৫-৯টি জেলায় বাংলাদেশীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ পরিনত হয়েছে। সেনাপ্রধান প্রকারান্তরে এই ব্যর্থতার জন্য বর্তমান বিজেপি সরকারের দিকেই আঙুল তুলেছেন। 
এ আই ইউ ডি এফ প্রধান তথা সাংসদ বদরুদ্দিন আজমল সেনাপ্রধানের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেছেন, সেনাপ্রধান রাজনৈতিক বক্তব্য রেখেছেন, এই বক্তব্যের মধ্যে রহস্যের সন্ধান পাচ্ছে এ আই ইউ ডি এফ নেতৃত্ব। কয়েক বছর আগে অসমের প্রয়াত রাজ্যপাল এস কে সিনহা তদানীন্তন রাষ্ট্রপতির কাছে দীর্ঘ এক প্রতিবেদন পেশ করে অভিযােগ করেছিলেন, অসম তথা উত্তর-পূৰ্বাঞ্চলে প্ৰতি দিন ৬০০০বাংলাদেশী অনুপ্রবেশ ঘটছে, অবৈধ বাংলাদেশীদের পাশাপাশি সীমান্ত এলাকায় ব্যাপক হারে চোরা কারবার, জালনােট, মাদক দ্রব্য, বেআইনি অস্ত্ৰ-শস্ত্র চোরা কারবার চলছে। প্রয়াত রাজ্যপাল সিনহা অভিযােগ করেছিলেন অসম-বাংলাদেশ সীমান্তে জনবিন্যাসের দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে, ভবিষ্যতে বাংলাদেশ এই অঞ্চলকে গ্রাস করবে। সেনাপ্রধান রাওয়াতের এই মারাত্মক অভিযােগের সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যের বিরােধী দলগুলােও বিজেপি সরকারকে আক্রমণের হাতিয়ার হিসাবে শান দিতে শুরু করেছে। রাজ্যের প্রধান বিরােধী দল কংগ্রেসের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্ৰী তৰুণ গগৈ অভিযােগ করলেন, কেন্দ্রের এবং রাজ্যের বিজেপি সরকার অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অভিযােগ করেন কেন্দ্রের ৪ বছরের বিজেপি সরকার আজ পর্যন্ত অসম-বাংলাদেশ সীমান্ত সীল করতে পারলাে না। বাংলাদেশীদের স্রোত অব্যাহত আছে। 
বিজেপির বিধায়ক প্রশান্ত ফুকন সেনাপ্রধানের বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, রাজ্যে অবৈধ অনুপ্রবেশ চলছে তাদের প্রশ্রয়দাতা এ আই ইউ ডি এফ। এ আই ইউ ডি এফ বিধায়ক আমিনুল ইসলাম তীব্র প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে বলেন, এ আই ইউ ডি এফ সম্পূর্ণ ধর্ম নিরপেক্ষ দল, কোনাে জাতপাতের প্রতিনিধিত্ব করে না এ আই ইউ ডি এফ, তাই সেনাপ্রধানের বক্তব্যকে সমর্থন করা যায় না। রাজ্যে বাংলাদেশীঅনুপ্রবেশকারীদের স্রোত অব্যাহত আছে বলে সরকার বিরােধী সব দল ই অভিযােগ করে থাকে। কিন্তু অসম-বাংলাদেশের ২৬৩ কিঃমিঃ সীমান্তের প্রায় ৬১ কিঃমিঃ জল ও স্থল সীমান্ত আজও উন্মুক্ত হয়ে পড়ে আছে। তিন দশক আগে সম্পাদিত অসম চুক্তির অন্যতম শর্ত ছিল সীমান্ত সীল করতে হবে, তা আজও উন্মুক্ত। রাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলাে নির্বাচনের স্বার্থে বাংলাদেশী ইস্যু’কে শুধুই ব্যবহার করে রাজনৈতিক অভিসন্ধি পূরনের চেষ্টা করে থাকে। প্রকৃতার্থে বাংলাদেশী সমস্যা চিরতরে সমাধান হওক তা আন্তরিকভাবে কোনও দলই চায়না, তাদের সদিচ্ছাও নেই।

SHARE THIS

No. 1 Web Media in North-East India. Maintained and Published by Saiyad Bulbul Jamanur Hoque on behalf of Save Media Solution (A unit of SAVE).

0 comments: