পতিনিন্দা সহ্য করতে না পেরে সতী আত্মত্যাগ করলে ভীষণভাবে ব্যথিত হয়ে মহাদেব ধ্যানে মগ্ন হন৷ এদিকে সতী পুনরায় জন্ম নিয়ে শঙ্করকেই বিবাহ করার পণ করেন৷ অতএব মহাদেবের ধ্যান ভগ্ন করার জন্য দেবরাজ ইন্দ্র কামদেবকে অপ্সরা এবং সস বসন্তের সঙ্গে কৈলাশে পাঠান৷ কামদেব মহাদেবের ধ্যান ভগ্ন করতে তো সক্ষম হলেন, কিন্ত তার প্রভাব মহাদেবের ওপর কার্যকরী হল না৷ ক্রোধিত শঙ্কর তার ত্রিনেত্র দিয়ে কামদেবকে ভস্মীভূত করেন৷ এই কাহিনী মানুষের কাম, ক্রোধ, মোহ প্রভৃতি শত্রুদের থেকে বাঁচার ইঙ্গিতবাহী হোলির দিনটিতেই কাম ভস্মীভূত হলো৷ কথিত আছে সেই থেকেই হোলিকা বা হোলি উৎসবের প্রচলন৷
পয়লা এবং ২ মার্চ সারা দেশের সঙ্গে রেল শহর লামডিঙেও দোল উৎসব সাড়ম্বড়ে শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়। বৃহস্পতিবার লামডিং-এর অগ্রণী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন সংকল্প আয়োজিত দোল উৎসব লামডিং এর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বাতাবরণকে ঋদ্ধ করে। স্থানীয় চিল্ড্রেন পার্কে আয়োজিত এই উৎসবের সূচনা হয় রাধাকৃষ্ণের যুগল মূর্তির আরাধনার মাধ্যমে। সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করে বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতি মঞ্চের সভাপতি অনিমেষ মজুমদার বলেন, সংকল্পের এই অনুষ্ঠান লামডিং-এর সকল সাহিত্য সংস্কৃতি প্রেমী লোক তথা সুস্হ মানসিকতার জনতাকে এক সূত্রে গেঁথেছে। বিগত কয়েক বছর ধরে সম্প্রীতির বার্তা বহনকারী এই অনুষ্ঠান স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠন ও সাংস্কৃতিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মিলন উৎসব।
চন্দনদেব এর পরিচালনায় কোমল গান্ধার সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, আয়েশা শীলের নৃত্যাঞ্জলি ডান্স আ্যকাডেমি, বিজয়া বনিকের আনন্দম সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়, দীপঙ্কর বর্মনের পরিচালনায় ইমন কল্যাণের ছাত্র-ছাত্রী, মণ্টি পালের সাঁই নৃত্য-কলা কেন্দ্রের ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবেশিত নৃত্যানুষ্ঠানে জম-জমাট হয়ে উঠে চিল্ড্রেন পার্ক। তানিয়া ভৌমিক, অরূপ পাল, পুনম ভৌমিকের পরিচালনায় সমবেত নুত্য চিরস্মিতা ধর, অহেলী দাস, শুভম দাস, সংঘমিত্রা দত্ত সরকার, পরিতোষ দাস প্রমুখের সঙ্গীত এবং বিশ্বজিত দত্ত ও বাপী মিত্র মজুমদারের যন্ত্রাংশে মুখরিত হয়ে উঠে উৎসবস্থলী৷
অনুষ্ঠান সুচারুরূপে পরিচালনা করেন রাজেশ বোস। উৎসবের ব্যবস্থাপনায় ছিলেন স্বপন দাস, আকাশ দাস, ধ্রুবজ্যোতি চৌধুরি, সজল দে, ধীরাজ দে, কাজল মজুমদার, অশোক চৌধুরি, অশোক দে প্রমুখ। সবশেষে সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন সংকল্পের সম্পাদক অর্জুন ধর।
এছাড়া লামডিং কালিবাড়িতে গত আঠাশে ফেব্রুয়ারি পরম্পরাগত প্রথা মেনে হোলিকা দহন করা হয়। ব্যবস্থাপনায় ছিলেন কালিবাড়ি কমিটির সভাপতি বিজয় রঞ্জন দাস, সম্পাদক অলক বর্ধন, কোষাধ্যক্ষ চম্পক রায়।
তাছাড়াও উত্তর লামডিং এর ইসকন মন্দির,সুভাষ পল্লীর গৌড়ীয় মঠ সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেও যথাযোগ্য মর্যাদায় দোল উৎসব পালিত হয়।
0 comments: