১৯ মাসের সরকার কাজ কর্মে জনগণ অসন্তুষ্টঃ বিধায়ক উৎপল দত্ত
গুয়াহাটী : আগামী ১২ মার্চ সােমবার অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের বাজেট পেশ করবেন। গত অর্থ বছরে বিভিন্ন বিভাগে বরাদ্দকৃত ৩৬১১.৩৫ কোটি টাকা আজও ব্যয় করা যায়নি। বিধানসভায় গত ২০ ফেব্রুয়ারী পরিপূরক মঞ্জুরির এই দাবিটি রাজ্যপাল ২৮ ফেব্রুয়ারীতে অনুমােদন জানিয়েছিলেন। অর্থ বিভাগের পরিপূরক মঞ্জুরীর বরাদ্দকৃত এই ৩৬১১.৩৫ কোটি টাকা আগামী ২০মার্চের মধ্যে ব্যয় করার লক্ষ্যে বিভাগীয় প্রধানদের প্রকল্পের বিপরীতে সিলিং দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু হাতে মাত্র ১১ দিন বাকী আছে অধিকাংশ বিভাগ সিলিং দাখিল করতে পারে নি বলে খবর পাওয়া গেছে। তাই সরকারের বরাদ্দকৃত বৃহৎ পরিমাণ টাকা রেভিনিউ ডিপােজিট’ করা ছাড়া গত্যন্তর নেই। কিন্তু কংগ্রেসসহ বিরােধী দলগুলােৰ অভিযােগ সরকারের হাতে অর্থই নেই। বিধানসভায় দাখিল করা সরকারী তথ্যে জানা গেছে এখনও পর্যন্ত সরকার ৫০ শতাংশ টাকাও ব্যয় করতে পারেনি।
অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বার বার দাবী করেছেন তাদের অর্থের অভাব নেই। কিন্তু অধিকাংশ বিভাগে আজ পর্যন্ত কোনও কাজ হয়নি বলে বিজেপি মিত্রজোট সরকারের শরিক অগপর দুই বিধায়ক অভিযােগ করেছে। অগপ বিধায়ক উৎপল দত্ত শুক্রবার অভিযােগ করেছেন, ১৯ মাসের সরকারের কাজ কর্মে জনগণ সন্তুষ্টনয়, পুৰ্ত্ত বিভাগ ছাড়া কোনও বিভাগে কাজ হয়নি। জলসম্পদ, সমাজকল্যাণ, সেচ, ভূমি সংরক্ষণ প্রভৃতি বিভাগে একেবারেই কাজ হয়নি। তার নির্বাচনী কেন্দ্র লখিমপুরে নদী বাঁধগুলি আজও মেরামত হয়নি। অধিকাংশ ঠিকাদার বকেয়া অর্থ পায়নি। এই অভিযােগ করার পর উৎপল দত্ত বলেন, তাদের দুই মন্ত্রী অতুল বরা এবং কেশব মহন্তেরও একই অভিযােগ। উভয়ে বলেছেন সরকারের হাতে অর্থই নেই।
অগপর অপর বিধায়ক পবিন্দ্ৰ ডেকা বলেন— সরকার রাজ্যের নদী বাঁধগুলি আজও সংস্কার করতে পারেনি। কারণ ঠিকাদারদের অর্থ দিতে পারেনি সরকার, কয়েক মাস বাদেই বর্ষা শুরু হবে। কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির নেতা অখিল গগৈ শুক্রবার বলেন, ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে সরকার ৫৫.২১ শতাংশ টাকা ব্যয় করতে পারেনি। বিজেপি জোট সরকার তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ১০০ শতাংশ কাজ করতে পারেনি। প্রধান মন্ত্রী মােদির সাধের শৌচালয় নির্মাণ প্রকল্পে গ্রামের মানুষকে উপহাস করা হয়েছে। কারণ যে ভাবে শৌচালয় বা ল্যাট্রিনগুলি নির্মাণ করা হচ্ছে তাতে মানুষ ঢুকতেই পারছে না। শৌচালয় নির্মাণ নিয়ে ব্যপক হারে দুর্নীতি হয়েছে।
সচিবালয় সূত্রে অভিযােগ পাওয়া গেছে, সপ্তম অর্থকমিশনের সুপারিশ মেনে রাজ্য সরকারের ৫ লক্ষাধিক কর্মচারীকে বেতন-ভাতা দিতে সরকারের কোষাগারের উপর অত্যন্ত চাপ পড়ছে। জি এস টি চালু হওয়ার পর সন্তোষজনক হারে রাজস্ব আদায় হচ্ছে না। কেন্দ্রীয় জি এস টির ভাগের টাকাও ঠিকমতাে রাজ্য সরকার পাচ্ছেনা। বিভিন্ন বিভাগে অনলাইন ব্যবস্থাও কার্যকর না হওয়ার অন্যতম কারণ অর্থভাব। প্রকল্প বর্হিভূত খাতে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করার ফলে ভাঁড়ারে টান পড়েছে। আর্থিক বিশৃঙ্খলা সরকারকে গ্রাস করেছে। অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মা আগামী ১২ মার্চ প্রথম ডিজিট্যাল বাজেট ভাষণে সরকারের শােচনীয় অর্থভাব কি করে পূরণ করবেন এবং কোন শক্তিতে বলীয়ান হইয়ে দাবী করবেন সরকারের অর্থের অভাব নেই, প্রকল্প গুলি বাস্তবায়নের যথেষ্ট অর্থ আছে। তা দেখার জন্য রাজ্যবাসী অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছেন।
0 comments: