গৃহ মন্ত্রালয়কে অবগত করতে দিল্লী যাচ্ছে বিধায়করা
গুয়াহাটি : অসমের জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এন আর সি) দ্বিতীয় খসড়া তালিকা প্রকাশের কাজ চলছে। রাজ্যের জাতীয় নাগরিকপঞ্জির সমন্বয়ক প্রতীক হাজেলা আজও দাবি করেছেন, সুষ্ঠ ভাবেই এন আর সিরনবায়নের কাজ চলছে। কিন্তু তার বিপরীতে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে বংশপঞ্জির পুনরিক্ষণের কাজে ব্যাপক নৈরাজ্যের সৃষ্টি হচ্ছে। বলে অভিযােগ আসছে।
গত কাল থেকে পঞ্চায়েত সচিব এবং সার্কেল অফিসারদের ইস্যু করা ২৯লক্ষ মহিলাদের নথি-পত্ৰ পুনরীক্ষণের কাজ শুরু হয়েছে, এই কাজে বিশেষ করে বরাক উপত্যকায় ব্যাপক বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে, সংখ্যালঘু মানুষদের হেনস্থার মুখে পড়তে হচ্ছে বলে বরাক উপত্যকার বিভিন্ন সংগঠন অভিযােগ করেছে।
রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের উত্তর পূর্ব প্রান্তের প্রচার প্রমুখ শঙ্কর দাসও অভিযােগ করে বলেন, এন আর সির তালিকা থেকে লক্ষ লক্ষ বাঙালি হিন্দুদের নাম বাদ পড়বে, বিদেশীদের নাম অন্তর্ভূক্ত হবে। এ ব্যাপারে আর এস এস দিল্লীতে প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা চালাবে।
একই অভিযােগ করেন শিলাদিত্য দেব। বিজেপির বিধায়ক শিলাদিত্য দেব, বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পালকে পাশে নিয়ে আজ সাংবাদিকদের কাছে অভিযােগ করেন, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান এন আর সি নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র করছে। স্বল্প মেয়াদি ভিসা নিয়ে ইতিমধ্যে দুশ র অধিক বাংলাদেশী মুসলিম এ দেশে এসে আর ফিরে যায়নি, এরকম হাজার হাজার বাংলাদেশী মুসলিম সীমান্ত পেরিয়ে এ রাজ্যে এসে তিন চার বছরের ভিসা নিয়ে এ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ঘর ভাড়া করে থেকে ভারতের বিরুদ্ধে চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে। এন আর সি তালিকায় বাংলাদেশী মুসলিমরা তাদের নাম অন্তর্ভূক্ত করেছে, তার বহু প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।
রাজ্যের ডিটেনশন ক্যাম্পগুলিতে বহু ভারতীয় নাগরিক বাঙালি হিন্দুদের আটকিয়ে রাখা হয়েছে। গােয়ালপাড়া জেলা কারাগারে গিয়ে দেখেছি প্রায় ৮২ বছরের এক বৃদ্ধকে আটক করে রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে তারা দিল্লীতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এন আর সি উদ্ভূত রাজ্যের ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা জানাবেন। করিমগঞ্জ কলেজের ছাত্রী মৌসুমি দাসকে বাংলাদেশে পালিয়ে নিয়ে গিয়ে ১৫ দিনের মধ্য তাকে মুসলিম ধর্মে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে।
এর পিছনে বাংলাদেশের গভীর চক্রান্ত আছে বলে অভিযােগ করেন, বিজেপি বিধায়ক শিলাদিত্য দেব। অসমের হিন্দু মেয়েদের বাংলাদেশে নিয়ে গিয়ে ধর্মান্তরিত করার মধ্যে লাভ জেহাদের সম্পর্ক আছেন, বলে মনে করেন বিধায়ক দেব। তিনি বলেন, ত্রিপুরা সীমান্ত দিয়ে মৌসুমি দাসকে বাংলাদেশে পাচার করা হয়। সহজেই পাসর্পোট ছাড়া পাচার হল, তাই উন্মুক্ত সীমান্ত পেরিয়ে হাজার হাজার বাংলাদেশী অসমে প্রবেশ করছে। ত্রিপুরা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের রােহিঙ্গা মুসলিমরা বরাকের পাথারকান্দি এলাকা দিয়ে অসমে প্রবেশ করছে। এন আর সিতে বাংলাদেশী মুসলিমদের নাম অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে, প্রশাসনকে সতর্ক হতে হবে। এন আর সি প্রস্তুত করার সময়ে বাংলাদেশী মুসলিমদের শনাক্ত করতে হবে। একবার এন আর সি তালিকা প্রকাশ হয়ে গেলে করার কিছু থাকবেনা বলে মন্তব্য করেন বিধায়ক দেব।
0 comments: