বিলটি নিয়ে সরকার বাঙালি হিন্দুদের সঙ্গে প্রতারণা করছেঃ হাফিজ রশিদ আহমেদ চৌধুরী

বাঙালি সমন্বয় সমিত অখিল গগৈয়ের সহযােগিতা চেয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছে 


গুয়াহাটি : নাগৰিকত্ব সংশােধনী বিলটি যৌথ সংসদীয় কমিটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, দেশের বিভিন্ন রাজ্যে গণশুনানি শুরু করেছে। অসম, মেঘালয়ের পর গণশুনানির জন্য চেয়ারম্যন রাজেন্দ্র আগরওয়ালা নেতৃত্বাধীন সংসদীয় কমিটি পশ্চিমবংগ সহ অন্যান্য রাজ্যে যাবে। কারণ বিলটি সারা দেশে প্রযােজ্য হবে। এ কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে রাজ্যের বিশিষ্ট আইনজীবি তথা নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমিতির উপদেষ্টা হাফিজ রসিদ আহমেদ চৌধুরী বলেন, বিলটি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার বাঙালি হিন্দুদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। বিলটি পাশ করার প্রলােভন দেখিয়ে ২০১৯ সালের লােকসভা নির্বাচন পর্যন্ত শুধু প্রতিশ্রুতি দিতেই থাকবে। বাঙালিদের ভােট নেওয়ার পর সব ভুলে যাবে। বিজেপি বিলটির পক্ষে কথা বলে হিন্দু বাঙালিদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। 
রাজ্য জুড়ে বিলটির বিরুদ্ধে গণ আন্দোলন সম্পর্কে সি আর পি সি উপদেষ্টা বলেন—নাগরিকত্ব বিলটি কি? সেই বিলের মধ্যে কি আছে? তা কেউ পড়ে দেখেছেন কি? বিলটির সম্পর্কে অধিকাংশের কোনও ধারণাও নেই, অথচ বিলটির বিরােধিতা করে বরাক ব্ৰহ্মপুত্ৰ উপত্যকায় জোরদার আন্দোলন ও প্রতিবাদ চলছে। এই বিলটিকে কেন্দ্র করে বরাকব্ৰহ্মপুত্ৰ উপত্যকার মধ্যে বিভাজনের রেখা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। 
বাঙালি-অসমিয়ার মধ্যে পারস্পরিক সৌহাদ্য, সম্প্রীতি বিনষ্ট হচ্ছে। পারস্পরিক দূরত্ব বৃদ্ধির ফলে বরাক উপত্যকায় বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের জমি প্রস্তুত হচ্ছে। বিজেপির উদ্দেশ্য হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করা। সে ক্ষেত্রে বিজেপি সফল হয়েছে। জাতীয় নাগরিকপঞ্জী নবায়নকে কেন্দ্র করেও রাজ্যে সংখ্যালঘু জনগােষ্ঠীর মধ্যে ভয় ও আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন জনগােষ্ঠীর মধ্যে বিভাজন স্পষ্ট হচ্ছে, যা রাজ্যবাসীর পক্ষে শুভ লক্ষণ নয়। বিশিষ্ট আইনজীবি চৌধুরী পুনরায় বলেন- দেশের এটর্নি জেনারেল অফ ইণ্ডিয়া বেনু গােপাল সুপ্রীমকোর্টে হলফনামা দাখিল করে এন আর সির চুড়ান্ত সময়সীমা বৃদ্ধি করার দাবি জানিয়েছিলেন। সেই কেন্দ্রীয় সরকার এখনও চাইছেন না এন আর সি যথাযথভাবে রূপায়িত হােক। তবে রাজ্যের স্বার্থে এন আর সির প্রয়ােজন আছে। এদিকে বাঙালি যৌথ সমন্বয় সমিতি, অসমের উদ্যেগে ১৪টি বাঙালি সংগঠনের এক বৈঠক গতকাল ওদালা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকে সমিতির অনুমতি ছাড়া কোনও সদস্যও টিভির টকশােতে অংশ গ্রহণের উপরে বাধা নিষেধ আরােপ করা হয়। 
শেখর দে, প্রদীপ সেন শর্মা, গৌরি বর্ধন, সুরেন সরকার ও তপন সেনকে নিয়ে এক কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়। সুকুমার বিশ্বাসের পৌরােহিত্যে অনুষ্ঠিত সভায় কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির নেতা অখিল গগৈয়ের সঙ্গে ‘টকশাে’য়ে সুকুমার বিশ্বাসের বিতর্কে কিছু ভুল বােঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছিল। তা নিরসনের চেষ্টা করে, বাঙালিদের বিভিন্ন সমস্যা ডি ভােটার, ডিটেনশন ক্যাম্প প্রভৃতির ক্ষেত্রে স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে অখিল গগৈয়ের কাছে সহযােগিতার প্রস্তাব পাঠানাে হয়। সংশােধনী বিলটি সারা দেশে প্রযােজ্য তাই বাঙালি হিন্দুদের বােঝা কেবল অসমের ঘাড়ে চাপালে হবে না, সারা দেশকে নিতে হবে। এমনই প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। 
অখিল গগৈ সমন্বয় সমিতির প্রস্তাবে সাড়া দিয়েছেন। কালকের যৌথ সভায় উপস্থিত ছিল নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমিতি, সারা অসম বাঙালি যুব ছাত্র ফেডারেশন, বঙ্গবাসী অসমিয়া সমাজ, অসম, বেঙ্গলি ঐক্যমঞ্চ, বেঙ্গলি সমাজ, অসম, এক্স বিটিএফ সুরক্ষা সমিতি, এক্স বিটিএফ জনকল্যাণ সমিতি, নর্থ ইষ্ট বেঙ্গলি সমাজ, বেঙ্গলি সুরক্ষা সমিতি, অল অসম বেঙ্গলি পরিষদ এবং অল অসম বেঙ্গলি ছাত্র সংস্থা প্রভৃতি ১৪টি সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

SHARE THIS

No. 1 Web Media in North-East India. Maintained and Published by Saiyad Bulbul Jamanur Hoque on behalf of Save Media Solution (A unit of SAVE).

0 comments: