ভারত হিন্দু রাষ্ট্র মুসলিম সম্প্রদায়ের স্থান আছে, বাংলাদেশী মুসলিমদের নেই

অধ্যাপক শরৎ মহন্তের স্মৃতি বক্তৃতায় অংশগ্রহণ ত্রিপুরার রাজ্যপাল তথাগত রায় 

গুয়াহাটিঃ উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে নিয়ে বৃহত্তর ইসলামিক রাষ্ট্র গঠনের ছক বানচাল করার জন্য জাত্যাভিমান ভুলে অসমের বাঙালি হিন্দুদের উচিত অসমীয়াদের সঙ্গে মিশে যাওয়া। এই। বিতর্কিত মন্তব্যের পর ত্রিপুরার রাজ্যপাল তথাগত রায় গুয়াহাটিতে গতকাল বলেন— পশ্চিবঙ্গের এক অংশ অসম তথা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সংযােগ ঘটিয়েছে। তাই আভ্যন্তরীন বাহ্যিক গন্ডগােল হলে অসম একঘরে হয়ে পড়তে পারে। তা থেকে রক্ষার জন্য অসমীয়া এবং বাঙালি শক্তিকে অসমে একত্রিত হয়ে থাকতে হবে। অধ্যাপক শরৎ মহন্তের স্মৃতি বক্তৃতায় অংশগ্রহণ করে ত্রিপুরার রাজ্যপাল গতকাল রাতে রয়েল গ্লোবাল স্কুল প্রেক্ষাগৃহে এই মন্তব্য করেন। অসমীয়া বাঙালির সম্পর্কের পুনরগঠন ও এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গী’ শীর্ষক বিষয়ের ওপর বক্তব্য রেখেছিলেন ত্রিপুরার রাজ্যপাল। 
তিনি বলেন— ভারত এক হিন্দু রাষ্ট্র। হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষদের সঙ্গে মুসলিম সম্প্রদায়েরও স্থান আছে। তবে বাংলাদেশী মুসলিমদের ভারতে কোনও স্থান নেই। বাংলাদেশ থেকে বাঙালি মুসলিমরা অসমে প্রবেশ করছে। নিজের দেশেই স্থানের অভাব। তাই তারা ভারতে ঢুকতে চাইছে। তাদের লক্ষ্য ভারত কেন? ইছলামিক রাষ্ট্রে কেন যাচ্ছে না? হিন্দু বাংলাদেশী সম্পর্কে বলেন— অসমে বাংলাদেশ থেকে কম সংখ্যক হিন্দু বাঙালি আসছে। তারা যাবে কোথায়? প্রকৃতার্থে বাংলাদেশ এবং অসমের নিকটবর্তী জেলা ধুবডিমৈমন সিংহ এবং বরাকের সিলেটে বাঙালি হিন্দুদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। বাকী জেলা পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা এবং কিছু সংখ্যক মেঘালয়ে প্রবেশ করেছে। 
বাঙালি হিন্দুদের আশ্রয় দিলে অসমীয়া সংস্কৃতি ধ্বংস হবে, এমন ধারণা অমূলক বলে মন্তব্য করে রাজ্যপাল বলেন— অসমীয়া সংস্কৃতির সঙ্গে বাঙালি সংস্কৃতির সাদৃশ্য আছে। লাচিত বরফুকনের মতাে বীর অসমে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু এই বীরের কাহিনী প্রতিবেশী রাজ্যগুলাে এখনও জানেনা। তরুণরাম ফুকনের মতাে দেশভক্ত লক্ষ্মীনাথ বেজবরুয়ার মতাে সাহিত্যিক, ভূপেন হাজরিকা-পারভিন সুলতানার মতাে সঙ্গীতজ্ঞ অসমকে সমৃদ্ধ করেছে। অন্য কোনও সংস্কৃতি অসমীয়া সংস্কৃতিকে গ্রাস করতে পারবে না। ভারতে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব আছে বলে উল্লেখ করে বলেন—রাষ্ট্রসংঘ ইতিমধ্যে শরণার্থীদের সংজ্ঞা তুলে ধরেছে। ভারত কিন্তু এই সংজ্ঞার চুক্তিধারী দেশ নয়। তারা মানতে বাধ্যও নয়। কিন্তু এই ভারতেই তিব্বত, পাকিস্তান এবং শ্রীলংকার শরণার্থীরা আছে। তাই ভারতে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের দায়িত্ব তাদেরই। 
এই অনুষ্ঠানে অসমের রাজ্যপাল জগদীশ মুখী, মুখ্যমন্ত্রী মিডিয়া উপদেষ্টা হৃষিকেশ গােস্বামী, সেচ মন্ত্রী ভবেশ কলিতা, মন্ত্রী পীযুষ হাজরিকা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অধ্যাপক শরৎ মহন্ত ট্রাষ্ট্রের প্রধান রিণিকা ভূইয়া শর্মা পরিচালিত এই গাম্ভীর্যপূর্ণ অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বাঙালি অসমীয়ার সংস্কৃতিক সাদৃশ্যতার কথা তুলে ধরে বলেন— বাংলার মহাপ্রভু চৈতন্যদেব এবং অসমের শ্রীমন্ত শংকরদেব ভারতীয় সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছেন এবং বৈদিক সংস্কৃতিকে বিকশিত করেছেন। হেমাঙ্গ বিশ্বাস বাংলা থেকে এসে এবং ভূপেন হাজরিকার সঙ্গে এক যুগে অসমের কৃষ্টি-সংস্কৃতিকে তুলে ধরে সাম্যের বাণী প্রচার করেছিলেন। অসমীয়া বাঙালির সম্পর্ক আজকের নয়, যুগ যুগ ধরে অব্যাহত আছে এই ধারা।

SHARE THIS

No. 1 Web Media in North-East India. Maintained and Published by Saiyad Bulbul Jamanur Hoque on behalf of Save Media Solution (A unit of SAVE).

0 comments: