অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত যৌথ সংসদীয় কমিটির বৈঠক

গুয়াহাটিতে ৭০ টি সংগঠনের প্রতিনিধিকে নিয়ে অসম সাহিত্য সভার বৈঠক 

গুয়াহাটি : মীরাটের সাংসদ রাজেন্দ্র আগরওয়ালা নাগরিকত্ব সংশােধনী বিলের যৌথ সংসদীয় কমিটীর চেয়ারম্যান। উত্তর প্রদেশের এক কেন্দ্রে উপ-নির্বাচনের জন্য যৌথ সংসদীয় কমিটীর বৈঠক অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে। সে বৈঠকেই নাগরিকত্ব বিল সম্পর্কে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ছিল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিং বিলটি ধর্মীয় ভিত্তিতে করার ক্ষেত্রে কোনও আপত্তি দেখেন নি। তবে কবে বিলটি সংসদে উঠবে, সেইব্যাপারে তিনি কিছুই জানাননি। রাজ্যে নাগরিকপঞ্জীর কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। প্রায় ৫০ হাজার সরকারী কর্মচারী ২৪ ঘণ্টা এই কাজে নিয়ােজিত। আগামী ৩০জুনের মধ্যে দ্বিতীয় খসড়া তালিকা প্রকাশ পাবে। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনােয়াল আজও তিনসুকিয়াতে বলেছেন, বিলটি নিয়ে আশংকা প্রকাশ করার কিছুই নেই। 
সরকার রাজ্যবাসীর স্বার্থবিরােধী কাজ করবেনা। এই প্রেক্ষাপটে আজ অসম সাহিত্য সভার উদ্যোগে গুয়াহাটিতে প্রায় ৭০ টি সংগঠনের প্রতিনিধিকে নিয়ে সংশােধনী বিল সম্পর্কে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অসম সাহিত্য সভার সভাপতি পরমানন্দ রাজবংশী আগামী তিন দিনের মধ্যে এক প্রস্তাব গ্রহণ করে ঘােষণা পত্র প্রস্তুত করবেন বলে জানান। সভাপতি বলেন, রাজ্যের খিলঞ্জিয়া মানুষের স্বার্থ সুরক্ষা করে ঘােষণা পত্র প্রস্তুত করা হবে। বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী ডঃ হীরেন গােহাঁই বলেন, সংসদীয় বিলটি জাতিধ্বংসী বিল। আন্দোনের জন্যে রাজ্যবাসীকে বহু ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। এইবিল নিয়ে তাদের আন্দোলন কোনও জাতি-জনগােষ্ঠীর বিরুদ্ধে নয়। বিশিষ্ট সাংবাদিক ধীরেন্দ্র নাথ বেজবরুয়া বলেন, এই বিলটি এনে সরকার অপরাধ করেছে। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ উদয়াদিত্য ভড়ালী বলেন, জাতিধ্বংসী এই বিলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াইকরতে হবে। আসুর সাধারণ সম্পাদক লুরীণজ্যোতি গগৈ বলেন—বিলটি কার্যকরী করলে চরম পরিণতির জন্য সরকারকে প্রস্তুত থাকতে হবে। প্রাক্তন সাংসদ কুমার দীপক দাস বিলটির বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখে বলেন, আগামী জুলাইমাসের সংসদের অধিবেশনে তারা বিরােধ করবেন। কর্মচারী পরিষদের নেতা বাসব কলিতা বলেন, বিলটি যেকোনও ভাবে আটকাতে হবে বলে হুংকার দেন। নাগরিকত্ব সংশােধনী বিল নিয়ে বিজেপির মধ্যেই অন্তঃদন্দের সৃষ্টি হয়েছে। 


বিজেপির বিধায়ক বিনােদ হাজরিকা আজ হুংকার দিয়েছেন, বিদেশিমুক্ত অসম গড়তে না পারলে এবং বিলটি কার্যকরী করলে এক মুহুর্তের জন্যও দলে থাকবে না। এর আগে দিসপুরের বিজেপি বিধায়ক অতুল বরা, গুয়াহাটির বিজেপি সাংসদ বিজয়া চক্রবর্তী প্রমুখ এই বিলটির বিরােধিতা করে অসমবাসীর অস্তিত্ব বিপন্ন হওয়ার কথা বলেন। শরিক দল অগপ ইতিমধ্যে হুংকার দিয়েছে, যেকোনও সময় সরকার থেকে সরে আসবে। 
এই বিশৃংখল এবং ডামাঢােলের বাজারে বিজেপি বিরােধী এই জোটে অগপ, বিপিএফ, এআইইউডিএফ এবং কংগ্রেস দলকে সামিল করে বিকল্প সরকার গড়ার মতাে কংগ্রেস বিধায়ক আব্দুল খালেকের এক প্রস্তাব নিয়ে গােটা রাজ্য জোর চর্চা হয়েছে। এই প্রস্তাবটি রাজনৈতিক মহল লুফে নিয়েছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল কুমার মহন্ত প্রস্তাবটি সমর্থন না করেও মন্তব্য করেছেন, রাজনীতিতে অসম্ভব বলে কিছুই নেই। প্রত্যুত্তরে আব্দুল খালেক সরাসরি বলেন, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল মহন্ত এই প্রস্তাবে সারা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করা উচিত।

SHARE THIS

No. 1 Web Media in North-East India. Maintained and Published by Saiyad Bulbul Jamanur Hoque on behalf of Save Media Solution (A unit of SAVE).

0 comments: