রাজ্যের ৪৭টি ৩৩কেভিএ সাব ষ্টেশন ব্যক্তিগত কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়া হবেঃ দীনেশ গােস্বামী
গুয়াহাটি : ঐতিহ্যমণ্ডিত কাজিরঙা রাষ্ট্রীয় উদ্যান, আহােম যুগের স্মৃতি সৌধ কারেং ঘর, রং ঘর প্রভৃতি বেসরকারিকরণ করার প্রস্তাবের পর এবার রাজ্যের বিদ্যুৎ ক্ষেত্রকে ব্যক্তিগতকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। বিদ্যুৎক্ষেত্র বেসরকারিকরণ প্রস্তাবের বিরােধিতা করে আসাম ষ্টেট পাওয়ার ওয়ার্কাস ইউনিয়ন রাজ্যজুড়ে আজ ২ ঘণ্টা অবস্থান ধর্মঘট পালন করে।
রাজ্যের ৪৭টি ৩৩কেভিএ সাব ষ্টেশন ব্যক্তিগত কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়া হবে। অন লাইনে টেণ্ডার গ্রহণ করা হয়েছিল, আজ তা খােলার কথা আছে।
আসাম ষ্টেট পাওয়ার ওয়ার্কাস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দীনেশ গােস্বামী আজ এই অভিযােগ করে বলেন, স্বল্পকালীন নােটিশে ডাকা তাদের অবস্থান ধর্মঘট বরাক-ব্ৰহ্মপুত্ৰ উপত্যকায় ভালাে সাড়া পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, বেসরকারিকরণের প্রতিবাদে তারা আগামি ১৭ মে’ গুয়াহাটিতে এক বৈঠক ডেকেছে। সেই বৈঠকে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।
সাধারণ সম্পাদক জানান, রাজ্যে বর্তমানে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা ১৩০০মেগাওয়াট, নিজস্ব উৎপাদন মাত্র ২৫০ মেগাওয়াট। ন্যাশানাল গ্রীড় এবং অন্যান্য রাজ্য থেকে চড়া দামে বিদ্যুৎ ক্রয় করছে। রাজ্যে প্রতিদিন ট্রান্সমিশন, প্রভৃতি কারণে ১১/১২ শতাংশ বিদ্যুতের লােকসান হয়। কৃষি বিভাগসহ রাজ্য সরকারের বিভিন্ন বিভাগ, বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থা। কোটি কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বাকি রেখেছে। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক থেকে বিদ্যুৎ বিভাগ কোটি কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। বিদ্যুৎ চিত্র অত্যন্ত ভয়াবহ। বিদ্যুৎ বিভাগের প্রায় ১১০০০ স্থায়ী কর্মচারি, আউট সাের্সিং দিয়ে কাজ চালানাে হচ্ছে। আসাম ষ্টেট পাওয়ার ওয়াকাস ইউনিয়নের প্রচার ।
সচিব আর জি কর্মকার রাজ্যের বিদ্যুৎ বিভাগের শােচনীয় অবস্থার কথা তুলে ধরে বলেন, বিদ্যুৎক্ষেত্রকে বেসরকারিকরণ করা হলে বিদ্যুতের মূল্য বহুগুণ বেড়ে যাবে। আম জনতা দুর্ভোগের মধ্যে পড়বে। রাজ্যে শিল্প বিনিয়ােগ হবে না। বেসরকারিকরণের প্রতিবাদে তারা জঙ্গি আন্দোলনের ডাক দেবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদির অসমসহ দেশের প্রতিটি গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে বলে দাবিকে নস্যাৎ করে দিয়ে আসাম ষ্টেট পাওয়ার ওয়ার্কাস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দীনেশ গােস্বামী বলেন, রাজ্যের অনেক গ্রামে এখনও বিদ্যুৎ পৌছাইনি, হয়ত বা বিদ্যুতের খুঁটি পোঁতা হয়েছে ট্রান্সফর্মার বসে নি। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের সৌভাগ্য পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে সব গ্রামে বিদ্যুৎ পৌছাতে পারে, আগামি ডিসেম্বরের মধ্যে এই কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার কথা আছে।
রাজ্য সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১৫ সালে ৮৮ শতাংশ বিদ্যুৎ পৌছিয়েছে। রাজ্যে ২৬ হাজার গ্রামের মধ্যে প্রায় ২৩ হাজার গ্রামে বিদ্যুৎ গেছে। বিদ্যুৎ বিভাগের এক মুখপাত্র জানান, প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত কাৰ্যালয়, বি ডি ও কাৰ্যালয়, বিদ্যালয় প্রভৃতি জায়গায় ১০ শতাংশ বিদ্যুৎ পৌছানের গ্রামগুলিকেই চিহ্নিত করেছেন।‘সৌভাগ্য’ প্রকল্প সফল হলে দেশের প্রতিটি গ্রামে ও প্রতিটি বাড়ীতে বিদ্যুৎ সংযােগ দেওয়া হবে।
0 comments: