এনআরসি:অ-সম ভূমিতে মৃত্যুর মিছিলের নবীনতম আক্রান্ত ৯৫ বছরের বৃদ্ধ

পারিজাত এন. ঘোষ: ১৯৫১র এনআরসি থাকা সত্ত্বেও ৯৫ বছরের বৃদ্ধাকে বিষপান করে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হলো!

বার বার নাগরিকত্বের নামে হয়রানী!বার বার হিয়াংরি!যন্ত্রণা ৪ ডির! আর্থিক, শারীরিক ভাবে দুর্বল বৃদ্ধা এই চাপে ক্রমেই ভারাক্রান্ত!  বার বার হিয়ারিং করার পরও আবার ডাকা হলো বায়োমেট্রিক টেষ্টে!
১৯৫১ সনের রাষ্ট্রীয় নাগরিক পঞ্জী( NRC) সহ সমস্থ ভারতীয় নথীপত্র থাকা সত্ত্বেও ৯৫ বছরের এই বৃদ্ধা শারীরিক,আর্থিক, মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে জীবন যুদ্ধে হার মানলো!

সে বিদেশী না,বাংলাদেশী না!এ দেশের একজন নাগরিক!স্বদেশ ছেড়ে যাবেই বা কোথায়?
জীবনের অন্তিম পর্যায়ে স্বদেশের মাটিতেই যাতে তার কবর দেওয়া হয়,সে আশাতেই এতদিন নাগরিকত্বের পরীক্ষা দেবার জন্য দিনের পর দিন কষ্ট করেছেন!

কিন্তু আসামের বকোর এই ৯৫ বছরের বৃদ্ধা খুব ক্লান্ত! ক্লান্ত এই অসভ্য সমাজ ব্যাবস্থা ও অমানবীয়,অগণতান্ত্রীক,অসংবিধানিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার কাছে!

চোখের ঘুম,মুখের খাবার কেড়ে নেওয়া শাসন ব্যবস্থায় ক্লান্ত আশ্রাফ আলীর এক দীর্ঘ বিশ্রামের প্রয়োজন ছিলো!
অবশেষে বিষ পান করেই ফেললো!

এখন সে চির নিদ্রায় নিদ্রিত!

আজ আর বৃদ্ধাকে কোনো পরীক্ষা দিতে হবেনা!
কেউ সন্দেহ করতে পারবেনা!
আর হিয়ারিংএ যেতে হবেনা!
কোনো দেশপ্রেমী বা জাতিপ্রেমীকে আজ থেকে তার আর পরোয়া করতে হবেনা!
এদেশ তাকে ঠাই দেবার প্রয়োজন নেই!আজ থেকে আশ্রাফ আলী সেই দেশের বাসিন্দা যেখানে ইতিমধ্যে সুব্রত দে,জুব্বার আলী,অমৃত দাস ও অন্যান্যরা আছেন!
জুব্বার সেও এনআরসি হীন,জাতিপ্রেম হীন,দেশপ্রেমীহীন দেশের "শান্তি" গ্রামের ৪৭ নং বাসিন্দা! যেখানে হিংসপ্রানীর কোনো জায়গা নেই!

এই মৃত্যুমিছিলে জানি কারো যায় আসেনা!আমাদের লেখা মেলা,সভা,আন্দোলন,ধিক্কার,প্রেসমিট ওসবেও কিছু যায় আসেনা!

এদের জন্য কেউ এয়োয়ার্ড ঘুরিয়ে দেবেনা!অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা বাঘা বাঘা প্রগতিশীল(!) বন্ধুরাও আজ জাতীয় চেতনায় ধৃতরাষ্ট্রের ভূমিকায়!নইলে কেবে যতটা মাথা ঘামায় এখানে কেন ততটা না?
আর। ফেডারেশন,আমছু সহ জাতীয় সংগঠন গুলো বারংবার আহাবান করা সত্ত্বেও কোনো মতেই এক হচ্ছেনা!সংগ্রাম করছে কিন্তু ৪২টা ভাগে বিভক্ত হয়ে!বিজনী,বড়পেটা ও অন্যান্য ছোটো ছোটো অঞ্চলে ঐক্যবদ্ধ হলেও আসাম ব্যাপী কেন্দ্রীয় নেতৃত্বরা এ ক্ষেত্র উদাশীন!
অসমীয়া সীমিত সংখ্যক প্রগতিশীল লোক এ কাজকে পছন্দ করছেনা যদিও তারাও স্বতস্ফুর্তভাবে প্রতিবাদে আসছেনা!

সরকার,বিরোধী, সংবাদ মাধ্যম এমনকি ন্যায়ালয়ের ওপরও মানুষ আস্থাহীন হয়ে পড়েছে!

আর যন্ত্রণা কত?
কবে হবে ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ-প্রতিরোধ?
স্থায়ী সমাধান?
কবে বাধ্য হবে দিছপুর-দিল্লি?

কতদিন চলবে এই মৃত্যুমিছিল?


SHARE THIS

No. 1 Web Media in North-East India. Maintained and Published by Saiyad Bulbul Jamanur Hoque on behalf of Save Media Solution (A unit of SAVE).

0 comments: