গুয়াহাটিঃ গুয়াহাটি উত্তর পূর্বাঞ্চলের প্রাণকেন্দ্র। এই অঞ্চলকে ঘিরে সাতটি রাজ্য, রেলওয়ে যোগাযোগ ব্যৱস্থা উন্নত হলেও মাত্র একটি রেলওয়ে লাইনের ওপর প্রায় ৫৬ যাত্রীবাহী ও মালগাড়ী ট্রেন আপ-ডাউন করে। যা দেড় গুন বেশি চাপ সহ্য করতে হচ্ছে রেলকে। অস্বাভাৱিক চাপের মধ্যে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে ট্রেন গুলিকে যাতায়াত করতে হচ্ছে, ছােটাে খাটাে দুর্ঘটনা লেগেই আছে। কেন্দ্রের কম্পট্রোলার এ্যাণ্ড অডিটর জেনারেলের (ক্যাগ) প্রতিবেদন এবং কেন্দ্রের চিফ ভিজিলেন্স কমিশনারের ভয়ংকর প্রতিবেদনের পরেও রেলওয়ের যাত্রীদের নিরাপত্তার দিকে আজ গুৰুত্ব দেওয়া হয়নি।
ক্যাগের প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে দেশের অধিকাংশ রেলওয়ে ষ্টেশনে নিন্ন মানের অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশন করা হয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে পানীয় জল অশুদ্ধ। এই প্রতিবেদনের পরেও যাত্রীদের নিন্ন মানের খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে, যাত্রীবাহী ট্রেনগুলির পরিচন্নতা বজায় রাখা হয়না, শৌচাগারগুলির অবস্থা অত্যন্ত সঙ্গীন, কামর্যাগুলিতে জল থাকেনা, ফ্যান ঘুরে না, অনেক ক্ষেত্রে লাইটও জলে না, প্রত্যিকটি কামরায় অতিরিক্ত যাত্রী তোলা হচ্ছে, ওয়েটিং লিষ্টের যাত্রীদেরও সংরক্ষিত কামরায় গ্রহণ করা হচ্ছে বলে কামরূপ এবং কাঞ্চনজঙ্গ এক্সপ্রেসের যাত্রীরা অভিযোগ করেছে। গত্ব রবিবার ইণ্ডিয়া রেলওয়ে ক্যাটারিং এ্যাণ্ড টুরিজম কপোরেশনের সরবরাহ করা খাবার খেয়ে মুম্ব-গােয়ার মাঝে চলাচল করা তেজস এক্সপ্রেসের ২৪ জন যাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন।
অল ইণ্ডিয়া রেলওয়েমেনস ফেডারেশনের সর্বভারতীয় সভাপতি রাখাল দাসগুপ্ত আজ চেন্নাই থেকে টেলিফোনে রেলের অৱস্থা সম্পর্কে নানা অভিযোগ করে বলেন গুয়াহাটি থেকে বহিঃরাজ্যে মেইন লাইনে মাত্র একটি ট্র্যাকের (একটি লাইন) ওপর দিয়ে প্রায় ৫৬ টি ট্রেন আপ-ডাউন করছে। প্রায় দের গুন বেশি ট্রেন চালানো হচ্ছে, যা অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ এবং বিপদজনক, আমরা বারবার রেলওয়ে উদ্ধতন কতৃপক্ষকে বলেছি, কিন্তু কতৃপক্ষ কোনও গুরুত্ব দেয় নি। রাজনৈতিক লাভালাভেব দিকে লক্ষ্য একটির পর একটি ট্রেন চালানো হচ্ছে। ত্রিপুরায় আগামি বিধানসভা নির্বাচনের দিকে লক্ষ রেখে তড়িঘডি করে আগরতলা-নয়া দিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেস চালানোর চেষ্টা হচ্ছে।
উত্তর পুর্ব সীমান্ত রেলওয়ে মজদুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক তথা রেলওয়ের বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা রাখাল দাসগুপ্ত অভিযোগ করেন, "লামডিং-শিলচর পাহাড় লাইন রাজধানী এক্সপ্রেস চালানোর উপযুক্ত হয়ে উঠেনি, গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনটি চালানোর সিদ্ধান্ত হলেও তা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলবে, কারণ পাহাড় লাইনে ধ্বসের প্রবণতা আছে|” মধ্য অসমের রেলওয়ে নগরী লামডিঙের অত্যন্ত জনপ্রিয় বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা তথা অল ইণ্ডিয়া রেলওয়েমেনস ফেডারেশনের সর্বভারতীয় সভাপতি রাখাল দাসগুপ্ত অভিযোগ লামডিঙকে গুরুত্বহীন করার সব চেষ্টা হচ্ছে। লামডিঙের ভোটাররা স্থানীয় সাংসদ তথা কেন্দ্রের রেলওয়ে প্রতিমন্ত্রী রাজেন গোঁহাইকে হাত ভরে ভোট দিয়েছেন। সেই সাংসদ গোঁহাই লামডিঙের মানুষের স্বৰ্গথেব বিরুদ্ধে কাজ করছেন। কেন্দ্রীয় রেলওয়ে মন্ত্রী পিযুজ গোয়েল দায়িত্ব নিয়ে রেলওয়ে কর্মচারীদের নানা অধিকার খর্ব করে দিয়েছেন। রেলওয়ে কর্মচারীদের অবসর কালীন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করেছেন, শেষ পর্যন্ত তাদের আন্দোলনের পথে নামতে হয়েছে। চেন্নাইএর এক হাস্পাতালে বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা রাখাল দাশগুপ্তর পেসমেকার বসানো হয়। সেখান থেকে রেলওয়ে বিভিন্ন অব্যৱস্থার কথা তুলে ধরেন।
0 comments: