এই নদী উৎসবের সূচনা করবেন দেশের রাষ্ট্রপতি রমানন্দ কোবিন্দ
গুয়াহাটি : অসমের ভৌগোলিক সীমারেখা ৭৮,৪৩৮.০০ বৰ্গ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে বরাক উপত্যকার দুইটি পার্বত্য জেলা কার্বি আংলং এবং ডিমা হাসাও জেলাসহ ভৌগোলিক সীমারেখা ৫৬,১৯৪,০০ বর্গ কিলোমিটার। মণিপুর, মিজোরাম থেকে প্রায় ৯০০ কিলোমিটার বরাক নদী উপত্যকার তিনটি জেলা অতিক্রম করে কুঁশিয়ারা-সুরমা নদী নাম নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। দক্ষিণ অসমে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নদী বরাক যা জাতীয় ১৬ নম্বর জলপথ হিসেবে পরিচিত। নমামি ব্ৰহ্মপুত্র উৎসৱের পর আগামি ১৮ নভেম্বর থেকে ২০ নভেম্বর পর্য্যন্ত তিন দিন যথাক্রমে বরাকের তিন জেলা কাছাড়, হাইলাকান্দি এবং করিমগঞ্জ জেলায় বরাক নদীর কিনারে নমামি বরাক উৎসব উদযাপিত হবে। দেশের রাষ্ট্রপতি রমানন্দ কোবিন্দ এই নদী উৎসবের সূচনা করবেন। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল, উত্তর পুর্বাঞ্চলের সব মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার কয়েকজন মন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন। খীম সঙ রচনার দায়িত্ব পেয়েছেন ইণ্ডিয়ান আইডল বিজয়ী দেবজিত সাহা।
অসম বিধানসভার উপাধ্যক্ষ দিলীপ কুমার পাল আজ দাবি করেন, স্বাধীনতার পর এই সর্বপ্রথম অবহেলিত বরাক নদীকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে বরাক-ব্ৰহ্মপুত্ৰ উপত্যকার সম্প্রীতির ওপর জোর দিচ্ছেন। এইবার নদী উৎসব সফল হলে বরাক উপত্যকার ভাষা, কৃষ্টি-সংস্কৃতি বিশ্বের দরবারে জায়গা করে নেবে। ব্ৰহ্মপুত্র-বরাক নদী শুধু ধ্বংস ও অভিশাপ নয়, এই দুই নদীর উন্নয়ন হলে, যথারীতি খনন হলে, দুই পারে বাঁধ নির্মাণ, রাস্তা তৈরি করা হলে দুই নদী মানুষের কাছে আশীর্বাদ হয়ে দেখা দেবে। এই তিন দিন নদী উৎসবের সময় বরাক উপত্যকার বিভিন্ন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী তাদের স্বকীয় বৈশিষ্ট্য, তাদের কৃষ্টি-সংস্কৃতি তুলে ধরার সুযোগ পাবেন। নমামি ব্ৰহ্মপুত্র উৎসব সফল হওয়ার পর কেন্দ্রীয় সরকার ব্ৰহ্মপুত্রের খনন দুপারে বাঁধ এবং রাস্তা নির্মাণের জন্য ৪০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। তা বাস্তবায়িত হলে, নমামি বরাক উৎসব সফলতার পর কেন্দ্রীয় সরকার বরাক উপত্যকার সার্বিক উন্নয়নে অর্থ বরাদ্দ করবে।
১৮ থেকে ২০ নভেম্বর বরাক নদী উৎসবে তাৎপৰ্য্য ব্যাখ্যা করে শিলচরের বি জে পি বিধায়ক তথা অসম বিধান সভার উপাধ্যক্ষ দিলীপ কুমার পাল বলেন, ভারত নদীমাতৃক দেশ, আগে মানুষ প্রকৃতিকে পুজো করত, জল ছাড়া পুজো হত না। তাই নদীকে শ্রদ্ধা জানিয়ে শিলচরে বরাক নদী সদর ঘাটে আরতি করে উৎসবের শুভারম্ভ হবে। তিনি বলেন, এই উৎসব সফল করতে ৪-৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এই উৎসব সফল হলে বিভিন্ন দিক থেকে বরাক তথা দক্ষিণ অসম উপকৃত হবে। অভিযোগ করেন গত ১৫ বছরে বিগত সরকার সমাজ কল্যাণ, কৃষি প্রভৃতির ক্ষেত্রে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। তার সরকার মাত্ৰ ৪-৫ কোটি টাকা ব্যয় কবে লোকসান তো হবেই না। বরঞ্চ সরকার প্রায় দশ হাজার কোটি টাকা কেন্দ্রীয় সরকারের কাজ থেকে পাবে। হিন্দু-মুসলিম, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মানুষ খোলা মনে নমামি বরাক উৎসবকে সফল করার জন্য বিধানসভার উপাধ্যক্ষ দিলীপ কুমার পাল বরাক বাসীর কাছে আহ্বান জানান।
0 comments: