গুয়াহাটি : জি এস টি কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত ২৩ তম বৈঠকে ১৯ জন অর্থমন্ত্রী এবং দুজন মুখ্যমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রনালয়ের প্রায় দুশো প্রতিনিধির উপস্থিতিতে গুয়াহাটি বৈঠকে সর্বসন্মত ঐক্যমতে পৌছান সম্ভব না হলেও বেশ কিছু নিত্য ব্যবহার্য সামগ্রীসহ ১৭৮ সামগ্রীর নিরীখ ২৮ শতাংশ থেকে ১৮ শতাংশ করা হয়েছে। যার ফলে সরকারের ৯০ হাজার কোটি টাকা লোকসান হবে বলে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী সাংবাদিক সন্মেলনে জানান। আজকের বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনার পর ঘড়ি, চকলেট, গহনা, মার্বেল পাথর, টুথপেষ্ট, ওয়াশিং পাউডার প্রভৃতির দাম কমানো হয়েছে। অপরদিকে এয়া কন্ডিশনার, পান মশলা, ওয়াশিং মেশিন, পেন্ট প্রভৃতির বিলাসী সামগ্ৰীর মূল্য বৃদ্ধি করা হয়। কুটীর শিল্প, বাঁশ, বেত, মাঝারি শিল্প প্রভৃতির ক্ষেত্রে নিরীখ কমানাে হয়েছে। ডিজিটাল লেন-দেনকে সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যে কিছু সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের স্বস্তি দিয়ে জরিমানার পরিমান ২০০ টা থেকে কমিয়ে ৫০ টাকা করা হয়েছে। আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে জি এস টির নতুন নিরিখ কার্যকরী করা হবে। গুজরাট, হিমাচল প্রদেশ এবং অন্যান্য রাজ্যের নির্বাচনের আগে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের স্বার্থে আজকের বৈঠকে বেশ কিছু স্বস্তিদায়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়৷
অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি দাবী করেছেন এই বৈঠকে জনমুখী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। যেটুকু ঘাটতি আছে পরবর্তী বৈঠকে তা নিয়ে পর্যালোচনা করা হবে। এদিকে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মা সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, তাদের দাবী অনেকটাই মেনে নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের যা লোকসান হবে, তা কেন্দ্রীয় সরকার মিটিয়ে দেবে বলে অর্থমন্ত্রী জেটলি আশ্বাস দিয়েছেন। বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা না থাকলেও পরে বৈঠকে যোগ দিয়ে পশ্চিম বঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা দীর্ঘদিন যুদ্ধ করে কিছু আদায় করতে পেরেছি। তা নীতিগতভাবে আমাদের দাবী মেনে নেওয়া হয়নি। দিল্লীর উপ মুখ্যমন্ত্রী মনীষ শিশোদিয়া অভিযোগ করেন, রিয়েল এষ্টেটের মতো বিষয়ে সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি। পাঞ্জাবের অর্থমন্ত্রী মনপ্ৰীত সিং বাদল অভিযোগ করেন, জি এস টি-র সুফল আম জনতা পাবে না। একটা ছােট এক টুকরো কাপড়ে জমা তৈরী করা হয়েছে, যা দিয়ে সব ঢাকা না। বিহারের উপ মুখ্যমন্ত্রী সুশীল কুমার মোদী জি এস টির সিদ্ধান্তগুলির প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, বেশ কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্ৰীর নিরীখ ২৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৮ শতাংশ করা হয়েছে। অপরদিকে অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনােয়াল জি এস টি কাউন্সিলের আজকের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, রাজ্যের মানুষ এর ফলে উপকৃত হবে।
পন্ডিচেরির মুখ্যমন্ত্রী ভি নারায়ন স্বামী, অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনােয়াল প্রমুখদের উপস্থিতিতে আজ পঞ্চতারকা হােটেল রেডিশন ব্লতে সকাল ১০-৩০ টা থেকে বিকাল ৫-৩০ টা পৰ্য্যন্ত এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কংগ্রেসের সভাপতি রিপুণ বরা আজকের বৈঠকে সমালোচনা করে বলেছেন, জি এস টি আম জনতাকে স্বস্তি দিতে পারলো না। প্রাক্তন মন্ত্রী রকিবুল হােসেইন রাহুল গান্ধীর মতো জি এস টিকে গব্বৰ সিং টেক্স বলে অভিহিত করে বলেন, জি এস টি সাধারণ মানুষের দূর্ভোেগ কমাতে পারবে না। আজকের দিনে অর্থ বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত শিক্ষামন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার শিক্ষা বিভাগ ঘোষণা করেছে আগামী শিক্ষা বর্ষ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে জি এস টি-কে পাঠ্যক্রমে অন্তৰ্ভুক্ত করা হবে। রাজ্যের ব্যবসায়ী মহল মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে এক মুখপাত্র জানান, রাজ্যে প্রায় ৬ লক্ষ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আছে। তাদের মধ্যে প্রায় ৯৮ শতাংশের নিজস্ব কোনও কম্পিউটারের ব্যবস্থা নেই। তারা রেজিট্রেশন বা রিটার্ণ ফাইল কি করে করবে ?
0 comments: