রাজস্ব গ্রামের অনুমতি দেওয়া অফিসারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে সরকার : প্রমীলারাণী ব্ৰহ্ম

গুয়াহাটি : গুয়াহাটি রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরবৰ্তী গুয়াহাটি-খানাপারা সংলগ্ন আমসাং বনাঞ্চল, যার পরিসীমা ৭৮.৬৪ বর্গ কিলোমিটার। ২০১৩ সালের ২০ আগষ্ট কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের অতিরিক্ত মুখ্য বনসংরক্ষক ড° অনিল কুমার অসমের বন বিভাগের প্রধান সচিব কুমার সঞ্জয় কৃষ্ণকে এক চিঠি (চিঠি নং ডি ও ৩-৩/৯৫/আর ও এনই/২১৭২) দিয়ে রাজ্যের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের স্বার্থে আমাসাংকে সংরক্ষিত বনাঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করে। ২০১৫ সালের ২৬ জুন কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রক এক চিঠি (চিঠি নং ১৭৩৬)র মাধ্যমে অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিরল প্রজাতির পশু-পাখির জন্য অত্যন্ত সমৃদ্ধ বনাঞ্চল হিসাবে গণ্য করে ইকো-সেনসেটিভ জোন ঘোষণা করার নির্দেশ দেন। বন দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আমাসাং বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হাতিদের আবাসস্থল, পেঙ্গুলিন, লেঙ্গুর, হুলক গিবন, চিতা, ৭৫০ প্রজাতির প্রজাপতি, ৩৫০ প্ৰজাতির মথ, অজগরসহ বিপন্ন প্রজাতির বিভিন্ন জন্তু-জানোয়ারের আবাসস্থল হচ্ছে আমসাং বনাঞ্চল। 
রাজনৈতিক নেতাদের আশীৰ্বাদপুষ্ট একাংশ ব্যবসায়ী ঐ স্পর্শকাতর অঞ্চলে তিনটি বৃহৎ আয়তনের সিমেন্ট কোম্পানী গড়ে তুলেছে বলে বিভিন্ন জনজাতি সংগঠনের সমন্বয়রক্ষী সমিতি অভিযোগ করেছে। এই সিমেণ্ট কারখানা ছাড়াও এক কোক ইণ্ডাষ্ট্ৰীও সেখানে স্থাপন করা হয়েছে। ২০১৩ সালে কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রক সিমেণ্ট কোম্পানী তিনটি অবিলম্বে উচ্ছেদ করার কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন। তদানীন্তন দুই বনমন্ত্রী প্ৰদ্যুৎ বরদলৈ এবং রকিবুল হুসেন কোন গুরুত্ব দেননি। বহাল তবিয়তে কারখানাগুলি চলছে এবং সবুজ বনাঞ্চলে দূষণ ছড়াচ্ছে। 
এই বনাঞ্চলের দশ কিলোমিটার জুড়ে বে-আইনীভাবে বসতি স্থাপন করা হচ্ছে। মজার কথা হচ্ছে এই সংরক্ষিত বনাঞ্চলে ৩১টি রাজস্ব গ্রাম আছে, একটি বিদ্যালয় আছে, বিদ্যুৎবাহী লাইন, রেশন কার্ড প্রভৃতি সব সুবিধায় আছে। জনজাতি সমন্বয় সমিতির প্রধান আদিত্য খাগলারি অভিযোগ করেন, এই বনাঞ্চলের আজ পর্যন্ত জরীপ হয়নি। বনমন্ত্রী প্রমীলারাণী ব্ৰহ্ম অভিযোগ করেন ভরত নরহ, বিজেপি নেত্রী সুমিত্ৰা পাটির, ব্যবসায়ী ভুবন গাম প্রমুখ বহু রাজনীতিবিদের জমি আছে আমসাং-এ। তাদের যেকোনভাবে উচ্ছেদ করা হবে। নির্দল বিধায়ক ভূবন পেগু, বিজেপি বিধায়ক সত্যব্ৰত কলিতা, অতুল বরা, কমলসিং নার্জরী প্রমুখ সরকারের উচ্ছেদ অভিযানের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। অসম সরকার গুয়াহাটি হাইকোর্টে আবেদন করে আমসাং-এর উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত রেখে দুমাস সময় চেয়েছেন। 
বনমন্ত্রী প্রমীলারাণী ব্ৰহ্ম অভিযোগ করেছেন, কোন অফিসার সংরক্ষিত বনাঞ্চলে রাজস্ব গ্রামের অনুমতি দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি জানান, দুমাস পরে পুনরায় আমসাং এবং পাভৈ বনাঞ্চলে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। তিনি অভিযোগ করেন, কংগ্রেস আমলেই বেদখলকারীদের কোনও উচ্ছেদ করা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল উচ্ছেদিত অঞ্চলে একমাত্র বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের পড়-শুনায় যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, সে ব্যাপারে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।

SHARE THIS

No. 1 Web Media in North-East India. Maintained and Published by Saiyad Bulbul Jamanur Hoque on behalf of Save Media Solution (A unit of SAVE).

0 comments: