আর্থিক সাহায্যপ্ৰাপ্ত নিহত ও নিরুদিষ্ট ৩২ সাংবাদিক
কমলা শইকীয়া, রত্নেশ্বর শর্মা শাস্ত্রী, পরাগ কুমার দাস, কুনরমল আগরওয়ালা, অনিল মজুমদার, রণবীর রায়, মানিক দেডরী, নুরুল হক, অংকুর বরবরা, বিমলা প্রসাদ তালুকদার, প্রকাশ হাজারিকা, দীপক স্বৰ্গীয়ারি, গিরিজা দাস, দীনেশ্বর ব্ৰহ্ম, জীতেন চুতিয়া, আল ফরিদ সাজাদউদ্দিন আহমেদ, পবিত্ৰ নারায়ন, কণক রাজমেধি, যোগেন্দ্র দৈমারী, মনিকণ দাস, বডোসা নাজারী, জগজিৎ শইকীয়া, ইন্দ্রমোহন হাকসাম, যোগেশ উজীর, মুসলিমউদ্দিন, রায়হানু নাইম, প্ৰহলাদ গোয়ালা, হরিচন্দ্ৰ বড়ো, পাঞ্জাতান আলী, কৌশিক চন্দ্র বরা, কৃষ্ণ ছেত্ৰী, হেমন্ত শৰ্মা
অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি :
মুখ্যমন্ত্রীর কাৰ্য্যালয় থেকে পঞ্চায়েত স্তরের সর্বত্ৰ দুৰ্নীতি নিৰ্মুল করতে হবে। রাজ্যে দুৰ্নীতিমুক্ত, স্বচ্ছ প্রশাসন উপহার দেওয়ার জন্য আমাদের সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। শুক্ৰবার শ্ৰীমন্ত শঙ্করদেব কলাক্ষেত্রের অধীনে শ্ৰীশ্ৰী মাধবদেব আন্তঃজাতিক প্রেক্ষাগৃহে সন্ত্রাসবাদী, সমাজবিরোধীদের হাতে নিহত এবং নিরুদ্দিষ্ট রাজ্যের ৩২ জন সাংবাদিকদের নিকটাত্মীয়ের হাতে এককালীন ৫ লক্ষ টাকার চেক তুলে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল ঐ মন্তব্য করেন। সংবাদিকদের আত্মত্যাগ, সমাজসেবার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে তিনি বলেন, সাংবাদিকদের সুরক্ষার জন্য সরকার দায়বদ্ধ। সাংবাদিকদের জীবন বীমার অধীনে আনা যায় কি না, সরকার এই সম্পর্কে চিন্তা ভাবনা করছে। গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ সাংবাদিকরা দুৰ্নীতি বিরোধী অভিযানে আমাকে সহায় করার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
অসমের সংবাদ মাধ্যম অত্যন্ত শক্তিশালী বলে মন্তব্য করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা কাঁচের ঘরে বাস করি। স্বচ্ছ কাঁচ, বাইরের মানুষ আমাদের কাজ-কর্ম প্রত্যক্ষ করে। আমাদের প্রতি তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখে। তাই আমাদের অসৎ পথে যাওয়ার কোনও রাস্তায় খোলা থাকে না। সংবাদ পত্রের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আপনারা আমাদের সরকারের প্রতিটি বিভাগের কাজ-কর্মের প্রতি তীক্ষ্ণ নজর দিন। আমাদের কঠোর থেকে কঠোরতম সমালোচনা করুন। আমরা এই সমালোচনা মাথা পেতে নেব। এবং আমাদের কাজ-কর্মে সংশোধনের চেষ্টা করে যাব। বরাক-ব্ৰহ্মপুত্রের সমন্বয়ের প্রতি জোর দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দুৰ্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসবাদমুক্ত, বিদেশী মুক্ত, প্ৰদূষণমুক্ত স্বচ্ছ প্রশাসন দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। রাজ্যের ৩৩ টি জেলাতে অপার সম্ভাবনা আছে। তা সদ্ব্যবহারের ক্ষেত্রে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য রাজ্যের যুব প্রজন্মকে সজাগ করে তোলার জন্য সংবাদ মাধ্যমকে আহবান জানান। আগামী ৩-৪ ফেব্রুয়ারিতে গুয়াহাটীতে বিশ্ব শিল্প বিনিয়োগ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। দেশ-বিদেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্ৰ মোদী এই শিল্প সমাবেশ উদ্বোধন করবেন। সেই বিনিয়োগ সমাবেশে অসমের প্রাকৃতিক সম্পদ এবং নানা সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।
এই অনুষ্ঠানে সন্ত্রাসবাদী, সমাজ বিরোধীদের হাতে নিহত এবং নিরুদ্দিষ্ট রাজ্যের ৩২ জন সাংবাদিকদের জীবন ও সংবাদ মাধ্যমে তাদের অবদান শীর্ষক গ্রন্থ “শ্রদ্ধার একাঁজলি’ এবং মধ্যপ্রদেশ ভ্ৰমণ করা মফস্বলের সাংবাদিকদের অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে তথ্য ও জনসংযোগ বিভাগের দ্বারা প্রকাশিত ‘মধ্যপ্রদেশ— এক অনন্য যাত্ৰা’ নামের গ্রন্থ দুটি মুখ্যমন্ত্রী উন্মোচন করেন।
তথ্য ও জনসংযোগ বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে রাজ্যের ৩২ জন সাংবাদিকের আত্মীয় স্বজনদেরকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রীর মিডিয়া উপদেষ্টা হৃষিকেশ গোস্বামী সাংবাদিকদের অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে উল্লেখ করে বলেন, বর্তমান সরকারের প্রথম সিদ্ধান্ত ছিল, সাংবাদিকদের আর্থিক সাহায্য প্রদান। সাংবাদিকরা যে ধরণে ত্যাগ স্বীকার করেছে, সামান্য অৰ্থর বিনিময়ে তা পরিমাপ করা যায় না। অতিরিক্ত মুখ্য সচিব এ, কে, সিং সাংবাদিকদের ‘কলম সৈনিক’ বলে অভিহিত করে বলেন, এই কলম দিয়েই সাংবাদিকরা সমাজের প্রহরী হিসেবে কাজ করে। রাজ্যের তথ্য ও জনসংযোগ বিভাগের ডিরেক্টর রাজীব প্রকাশ বরুয়া নিহত ও নিরদিষ্ট সাংবাদিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে উপস্থিত সাংবাদিক এবং অতিথি অভ্যাগকতদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
এই অনুষ্ঠানে বিধায়ক জয়রাম ইংলেং, মুখ্যমন্ত্রীর আইন উপদেষ্টা শান্তনু ভরালী, অসম পৰ্যটন উন্নয়ন নিগমের অধ্যক্ষ জয়ন্ত মল্ল বরুয়া, শহিদ সাংবাদিকদের আত্মীয় স্বজনসহ রাজ্যের বিভিন্ন সংবাদ গোষ্ঠীর সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
0 comments: