গুয়াহাটি : অসমে নেশাজাতীয় সামগ্ৰী বন্ধের প্রয়াস বহুদিনের। অসম বিধানসভায় তামাক বিরোধী আইনের প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছিল। অসমকে তামাক মুক্ত রাজ্য গড়ার প্রয়াসও ব্যর্থ হয়েছে। দেশের গুজরাট, বিহার এবং নাগাল্যান্ডের পর অসমকেও সুরামুক্ত রাজ্য হিসেবে ঘোষণা করার প্রথম প্রয়াস হিসেবে ক্যাবিনেট কমিটির বৈঠকে ৰাজস্ব হারাবার ঝুকি নিয়েও আগামী জানুয়ারি মাস থেকে রাজ্য জুড়ে সুরা মহলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। সব সুরামহল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রতি নতুন বছরের শুরুতে কেবল গুয়াহাটি মহানগরেই কয়েক কোটি টাকার মদ বিক্ৰী হয়। এবার নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফলে সরকার বৃহৎ পরিমান টাকার রাজস্ব হারাবে। প্রকাশ্য স্থানে মদ বিক্রেতা এবং মদ খাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তিন বছর পর্যন্ত জেল ও জরিমনারও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে আবাগারী বিভাগের মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন— মদ স্বাস্থ্যর পক্ষে ক্ষতিকারক। মদ পরিবার এবং সমাজকে ধ্বংস করে। ক্যাবিনেট কমিটির ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তে পরিষ্কার হয়নি দেশী মদ না, বিলাতী মদ। কোন মদের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে। কারণ রাজ্যের উপজাতি অঞ্চলের মানুষের প্রবনতা দেশী মদের ওপর। উপজাতি পরম্পরার ঐতিহ্য মেনে চাল এবং অন্যান্য সামগ্ৰী দিয়ে তৈরি মদ পরিবেশন করা হয়। তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়।
এদিকে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনােয়াল রাজ্যে কর্ম-সংস্কৃতি গড়ে তােলার ওপর জোর দিচ্ছেন। দুৰ্নীতিমুক্ত স্বচ্ছ প্রশাসন উপহার দেওয়ার লক্ষ্যে সরকারী কর্মচারীদের অতিরিক্ত পরিশ্রম করার উপর আজি জানিয়েছেন। তিনি আগামী ১ জানুয়ারি থেকে সকাল ৯-৩০ থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত সরকারী কার্যালয়ের সময়সীমা নিৰ্দ্ধারণ করে দিয়েছে। মাঝে আধা ঘণ্টা সময় টিফিনের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। কিন্তু সচিবালয়ের বিভিন্ন কর্মচারী সংগঠন অভিমত পোষণ করেছে, শীতের দিনে সকাল ৯-৩০ টা অনেক আগে হয়ে যাচ্ছে। কর্মচারীদের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির দিকেও সরকার যত্নবান হয়েছে। প্রতিটি বিভাগের ক্যাজুয়েল কৰ্মীদের ৬,৫০০ থেকে বেতন বৃদ্ধি করে ৯,০০০ টাকা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। গ্রাম প্রধানদের পারিশ্রমিক ৪,২০০ থেকে বৃদ্ধি করে ৬,৫০০ টাকা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মেডিক্যাল আ্যলাউন্সের বদলে প্ৰতিজন কর্মচারীকে হেলথ কার্ড দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। জি এস টি নিয়ে নানা অভিযোগ। তাই রাজ্যে যারা শিল্প স্থাপনে আগ্রহী হবে, তাদের জন্য কিছু ছাড় দেওয়া হয়েছে। মাঝারি শিল্প উদ্যোগীদের জন্য জি এস টিতে ১৫০ শতাংশ, এবং বৃহৎ শিল্প উদ্যোগীদের জন্য ২০০ শতাংশ ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তা বহাল থাকবে। গুয়াহাটি থেকে নলবাড়ী-টিহু পর্যন্ত জাতীয় সড়কের দুই পাশে শিল্প উদ্যোগ স্থাপনের জন্য শিল্পজোন ঘোষণা করা হয়েছে।
আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিকে লক্ষ্য রেখে প্রার্থীদের যোগ্যতার নিরিখ বেঁধে দেওয়া হয়েছে। জেলা পরিষদের সদস্যদের নূন্যতম যোগ্যতা হিসেবে সাধারণ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে স্নাতক এবং এস টি, এস সি প্রার্থীদের ক্ষেত্র নূন্যতম উচ্চতর মাধ্যমিক পাশ বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। একইভাবে আঞ্চলিক পঞ্চায়েত সদস্য এবং গ্রাম পঞ্চায়েত সভাপতিদের জন্য উচ্চতর মাধ্যমিক, এবং পঞ্চায়েত সদস্যদের জন্য ক্লাস ৮ পাশ যোগ্যতা নিদ্ধারণ করা হয়েছে।
0 comments: