বাংলাদেশের বিজয় দিবসে ‘গান পাগল গােষ্ঠী’র অনন্যা সন্ধ্যা উপহার



অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি : 
“বাংলাদেশী”— এক উচ্ছিষ্ট, অদরকারী শব্দ। যার স্থান ডাষ্টবিনে। অসমের উগ্র জাতীয়তাবাদী শক্তির একাংশ বাংলাদেশী সম্পর্কে এমনই ধারণা পোষণ করেন। সেই বাংলাদেশীদের শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সমাজ শনিবার বাংলাদেশের বিজয় দিবসে যে ধরণের উচ্চমানের সাংস্কৃতি সন্ধ্যা উপহার দিল, যা গুয়াহাটিবাসীর সারা জীবনের স্মরণে ও মননে থাকবে। 
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। পূর্ব পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জীবন-মরণ সংগ্রাম করে লক্ষ লক্ষ শহীদের জীবনের বিনিময়ে স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিয়েছিল। সেই দিবসের স্মরণে গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ এই দিনটিকে জাতীয় বিজয় দিবস হিসেবে উদযাপন করে আসছে। এই দিবস উপলক্ষে ঢাকার প্রথম সারির ‘গান পাগল সাংস্কৃতিক গােষ্ঠী” নদী মাতৃক বাংলাদেশের মনােরম প্রকৃতির ভাটিয়ালি-সারি প্রভৃতি সুরের লোকোসঙ্গীতের ঢালি সাজিয়ে গুয়াহাটিবাসীকে মনােমুগ্ধ করে গেলেন। 
মহম্মদ সোহেবের নেতৃত্বে শিউলী ভট্টাচার্য, সুমি, ইভান, সানি প্রমুখ শিল্পীরা একটির পর একটি বাংলা-অসমীয়া সঙ্গীত, লোকো নৃত্য পরিবেশন করলেন। অধ্যাপক, ডক্টরেট, আইনজীবী, গবেষকদের নিয়ে গঠিত ‘গান পাগল গোষ্ঠী” মাতিয়ে দিয়ে গেলেন কলাক্ষেত্রের মাধবদেব প্রেক্ষাগৃহ। সুর-লয়-তালের মুৰ্চ্ছনায় বাংলা আর বাঙালির আবেগ-কৃষ্টি-সংস্কৃতি সব একাকার হয়ে গেল। রবীন্দ্ৰ নাথ বাংলা সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংগ। তাই সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় অবধারিতভাবে বিশ্বকবির উপস্থিতি ছিল। বিশ্বকবির রচনা বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত— ‘সোণার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি....’। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত যখন যন্ত্র সঙ্গীতের মাধ্যমে সুর তুলল, তখন প্রেক্ষাগৃহ পুরো দাঁড়িয়ে উঠে জাতীয় সঙ্গীতের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। সম্পৰ্কে্র গভীরতায় যা সাংস্কৃতিক সন্ধ্যাকে অন্য মাত্রা দিয়েছে। 
গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ অসম তথা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে ভ্ৰাতৃত্বের সেতু গড়ার লক্ষ্যে গুয়াহাটি মহানগরে সহকারী এক কার্যালয় স্থাপন করেছে। সহকারী হাইকমিশনার কাজী মুস্তাশির মুর্শেদ অতিথি অভ্যাগতদের স্বাগত জানিয়ে অসমের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, গুয়াহাটিতে সহকারী হাইকমিশনারের কার্যালয় স্থাপনের পর থেকে এই অঞ্চলের সঙ্গে সাংস্কৃতিক এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক সূদৃঢ় হয়েছে। রাজ্যের জলসম্পদ মন্ত্রী কেশব মহন্ত বাংলাদেশের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ জ্ঞাপনে করে বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক শক্তিশালী হলে অসমের উন্নয়নও ত্বরান্বিত হবে। এই দিবস উপলক্ষে অসম পৰ্যটন উন্নয়ন নিগেমর ম্যানেজিং ডিরেক্টর কৌসর জে হিলালি, স্বাধীনতা সংগ্ৰামী আহমেদ হুসেইন এবং ফ্রেন্ডস অফ বাংলাদেশ, অসম চ্যাপিটারের সভাপতি সৌমেন ভারতীয়াকে সংবৰ্দ্ধনা জানানো হয়। রাজ্যের বিশিষ্ট আইনজীবী হাফিজ রশিদ আহমেদ চৌধুরী, সহ রাজ্যের বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা উপভোগ করেন৷


SHARE THIS

No. 1 Web Media in North-East India. Maintained and Published by Saiyad Bulbul Jamanur Hoque on behalf of Save Media Solution (A unit of SAVE).

0 comments: