নাগরিকত্ব বিলের বিরোধিতা বিরোধী দলপতির
গুয়াহাটি : জাতীয় নাগরিক পঞ্জী (এন আর সি)র আংশিক খসড়া তালিকা প্রকাশের জন্য যুদ্ধকালীন প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। রাজ্যের স্পর্শকাতর জেলাগুলিতে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এর পরও কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির নেতা অখিল গগৈ এন আর সি সম্পর্কে সরকারের ভূমিকায় সন্দেহ প্রকাশ করেন। জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীনে দীর্ঘদিন কারারুদ্ধ অবস্থায় থাকার পর মুক্তি পেয়েই সংবাদ মাধ্যমের কাছে বিস্ফোরক অভিযোগ করে তিনি বলেন, এন আর সি রূপায়ন করতে চাইছে না রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনােয়াল শপতগ্রহণ করেই এন আর সি কার্যালয়ে গিয়ে প্রস্তুতিপর্ব খতিয়ে দেখেন। তার পরই ষড়যন্ত্র শুরু হয়। কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার এন আর সির কাজকর্মে নিয়োজিত কর্মচারীদের প্রাপ্য পারিশ্রমিকটুকুও দেওয়া মাঝে বন্ধ করে দেয়। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ এন আর সি রূপায়নে আন্তরিকতা দেখিয়েছিলেন।
শুক্রবার স্থানীয় এক টিভির চ্যানেলের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট সাংবাদিক অজিত কুমার ভূইয়ার বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে অখিল গগৈ বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশে নিৰ্যাতিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী খ্ৰীষ্টান, পাৰ্সী, জৈন, শিখ, বাঙালি হিন্দু প্রভৃতি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোককে এদেশে স্থায়ী পুনর্বাসনের লক্ষ্যে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আনতে চাইছেন। এর ফলে ১৯৭১ সালের ২৪মার্চের পর আসা প্রায় ২০ লক্ষ বাঙালি হিন্দু এবং বাংলাদেশের ১কোটি ৭০লক্ষ বাঙালি হিন্দুকে এদেশে স্থায়ী পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে অসমের অস্তিত্ব বিপন্ন করতে চাইছেন কেন্দ্রীয় সরকার। দুই বাঙালি প্রধান রাজ্য পশ্চিমবংগ এবং ত্রিপুরা বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ করে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন মেনে কাজ করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই বাঙালি হিন্দুদের বােঝা চাপবে অসমের ঘাড়ে। রাজ্যের জটিল পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে কৃষক নেতা অখিল গগৈ জাতীয়তাবাদী সংগঠন আসু, যুব ছাত্র পরিষদ, আমসু, বাঙালি সংগঠন, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, সত্ৰ মহাসভাসহ সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করে জনবিরোধী সরকারের বিরুদ্ধে লড়তে রাজ্যবাসীকে আহ্বান জানান।
তিনি এক বিকল্প সরকারের ছকের কথাও বলেন। অগপর ৬ জন, বিপিএফের ৬জন, এআইইউডিএফের ৬জন এবং রণোজ পেগুর দলের একজনকে নিয়ে মোট ১৯জনকে মন্ত্রীত্ব করে বাইরে থেকে কংগ্রেস দলের সমর্থন নিয়ে বিকল্প সরকার গঠনের পরামর্শও দেন।
এদিকে বিরোধী দলপতি দেবব্রত শইকীয়া নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের তীব্র বিরোধিতা করে বলেন, ২০১৬ সালের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের সুযোগ নিয়ে যে কেউ নথি পত্র ছাড়ায় এরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে। এক নাগাড়ে ৬ বছর এরাজ্যে বসবাস করলেই বৈধ নাগরিক হওয়ার সুযোগ পেয়ে যাবেন। যার ফলে রাজ্যের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। সরকারের দুৰ্নীতি বিরোধী অভিযানকে কটাক্ষ করে বলেন, জেসিবি ব্যবহার করে রাজ্যজুড়ে পাথর, বালি এবং অবৈধভাবে কয়লা খনন চলছে। যার ফলে নদীগুলিতে ব্যাপক ধ্বসের সৃষ্টি হবে। বন্যার প্রকোপে বাড়বে। কৃষি বিভাগে ট্রেক্টর কেনার নামে ৫০০কোটি টাকার দুৰ্নীতি চাপা দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে সরকার।
0 comments: