যােগ্য মানুষের হাতে চেয়ারম্যানের পদ তুলে দিচ্ছেন না কেন? অধ্যাপক চক্রবর্তীকে প্রশ্ন বিধায়ক শিলাদিত্যের
গুয়াহাটি : সৰ্বানন্দ সনােয়াল নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোট সরকার ক্ষমতাসীন হয়ে রাজ্যে ৬টি স্বশাসিত পরিষদ এবং ৩৩টি উন্নয়ন পরিষদকে পুনর গঠন করেন। চলিত বাজেট অধিবেশনে সমতলীয় উপজাতি এবং অন্যান্য পশ্চাতপদ জাতিগােষ্ঠীর উন্নয়ন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী প্রমিলা রাণী ব্ৰহ্ম বিধানসভায় জানান, হিন্দী ভাষী উন্নয়ন পরিষদ, বাংলাভাষী উন্নয়ন পরিষদ সহ কয়েকটি পরিষদের বার্ষিক বাজেট বরাদ্দ করা হয়নি। তিনি এই বাজেট বরাদ্দ না হওয়ার কোনও কারণ জানাননি। বিগত তরুণ গগৈ সরকার প্রাক্তন মন্ত্রী ডাঃ অর্ধেন্দু কুমার দে কে চেয়ারমেন করে বাংলাভাষী উন্নয়ন পরিষদ গঠন করেছিলেন। কিন্তু সেই পরিষদের উন্নয়নে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েও গগৈ সরকার এক পয়সাও বাজেট বরাদ্দ করেননি।
গুয়াহাটী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অমলেন্দু চক্রবর্তীকে চেয়ারম্যান পদে বসিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনােয়াল বাংলাভাষী উন্নয়ন পরিষদ গঠন করে দেন, তা প্রায় বছর গড়িয়ে গেল, আজ পর্যন্ত অধ্যাপক চক্রবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনা নিয়ে এমনই ব্যস্ত যে পরিষদ গঠনের সময়ই করে উঠতে পারলেন না। বাংলাভাষী উন্নয়ন পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রামকৃষ্ণ ঘােষও হাত গুটিয়ে বসে আসেন। হােজাইয়ের বিজেপি নেতা রামকৃষ্ণ ঘােষ জানান, চেয়ারম্যান চক্রবর্তী কেন পরিষদ গঠন করছেন না, সে সম্পর্কে তার কিছু জানা নেই। অধ্যাপক চক্রবর্তী জানিয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্ৰী সময় দিতে পারছেন না বলে পরিষদ গঠন করা যাচ্ছে না।
বিজেপি বিধায়ক শিলাদিত্য দেব ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন— মুখ্যমন্ত্ৰী সব সময় সবার দেখা করেন, বুঝে উঠতে পারছিনা অধ্যাপক চক্ৰবৰ্তীকে কেন সময় দিচ্ছেন না। অধ্যাপক চক্রবর্তীকে এত বড় পদ দেওয়া হয়েছে, রাজ্যের বাঙালিদের সাথে কাজ করতে না পারলে পদটি নিয়ে বসে আছেন কেন? রাজ্যে বহু যােগ্য মানুষ আছেন এই পদটি গ্রহণের জন্য। বিধায়ক শিলাদিত্য বলেন মুখ্যমন্ত্রী তাকে ডেকে নিয়ে ত্রিপুরা নিয়ে গেলেন। অধ্যাপক চক্রবর্তী যদি তাকে বলতেন তবে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের ব্যৱস্থা করে দিতে পারতেন। বিজেপি দলের মধ্যে প্ৰশ্ন উঠেছে গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অমলেন্দু চক্রবর্তী বর্তমানে অধ্যাপনার কাজে ব্যস্ত, তাই তাকে রাজ্যের বাঙালিদের উন্নয়নের দায়িত্ব দেওয়া উচিত হয়নি। অধ্যাপনা এক লাভজনক পদ তাই অন্য পদে দায়িত্ব পেতে পারেন না।
বিজেপির অন্দরমহলের প্ৰশ্ন— অধ্যাপক চক্ৰবৰ্তী অৰ্থমন্ত্ৰী হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মাৰ ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি৷ তাই তাকে নানাভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে৷ বিজেপি নেতা প্রাণতােষ রায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অধ্যাপক চক্রবর্তীর উচিত, চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করে অন্য কাউকে সুযােগ করে দেওয়া। তিনি অভিযােগ করেন সব সুযােগ পাচ্ছেন বরাক উপত্যকার বাঙালিরা, সেখানে মন্ত্রী, নেতা আছেন।
ব্ৰহ্মপুত্ৰ উপত্যকায় বাঙালিদের কোনও দামই নেই, অথচ তারাই বিজেপিকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। রাজ্যের ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগােষ্ঠীর উন্নয়নে গঠিত সংখ্যালঘু উন্নয়ন বাের্ড রাজ্যের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের স্বার্থে ভালাে কাজ করছে। এই বাের্ডের চেয়ারম্যান মমিনুল আওয়াল জানান, রাজ্যে সরকার তাদের বাের্ডকে ১২ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে আরও দেবে বলে মুখ্যমন্ত্ৰী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷ বাংলাভাষী উন্নয়ন পরিষদ বছরখানিক হলাে গঠিত হয়েছে, চেয়ারম্যান অধ্যাপক চক্রবর্তী একটু সক্রিয় হলে অন্তত বাঙালিদের সামান্য হলেও কিছু উন্নতি হতাে।
0 comments: