অভিযুক্তরা রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা ভিক্ষা চেয়ে আবেদন করেন : মানবেন্দ্র চক্ৰৱৰ্তী
অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি :
কলেজ ছাত্রী পরিস্মিতা বুড়াগােহাঁই প্রায় আড়াই বছর বন্ধ জাগীরােড পেপার মিলের দুরৱস্থার। কথা তুলে ধরে সরকারের ব্যর্থতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার পর থেকেই নানা প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। গতকাল শিল্প বাণিজ্য মন্ত্রী চন্দ্রমােহন পাটোয়ারী জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প মন্ত্রণালয় ১৮০০কোটি টাকার প্যাকেজ ঘােষণা করেছে, শীঘ্রই পেপার মিল দুটি চালু হবে। এই ঘােষণার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের এক সূত্র জানিয়ে দিয়েছে। জাগীরােড এবং কাছাড় পেপার মিল দুটি চালু করা সম্ভৱ নয়। বাঁশ সম্পদকে কাজে লাগিয়ে মিল দুটি অন্য সামগ্ৰী উৎপাদনের চেষ্টা করা হবে পি পি পি মডেলের মাধ্যমে। পেপার উৎপাদন করা হবে না, কারণ কেন্দ্রীয় সরকার ‘পেপারলেস সিষ্টেম’ চালু করতে চাইছে, অন্য কিছু সামগ্ৰী উৎপাদন করা হবে। এক সংবাদ সূত্রে আজ এ কথা জানা গেছে। চন্দ্রমােহন পাটোয়ারীর আশ্বাস সম্পর্কে হিন্দুস্থান করপােরেশনের কাছাড় পেপার মিলের আই এন টি ইউ সির সভাপতি মানবেন্দ্ৰ চক্ৰৱৰ্তী আজ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘পাটোয়ারী আবার আরেকটা প্রতিশ্রুতি দিলেন যার কোনও মূল্য নেই। জাগীরােড এবং কাছাড় পেপার মিলের কর্মচারীরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্ৰ মােদী, মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনােয়াল, পুৰ্ত মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য, বিধানসভার উপাধ্যক্ষ দিলীপ পাল প্রমুখদের দেওয়া প্রতিশ্রুতির উপরে আর ভরসা করতে পারছে না, তারা এবার দেশের সৰ্বোচ্চ সাংবিধানিক প্রধান রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হয়েছে।
রাষ্ট্রপতিরাম নাথ কোবিন্দ তাদের দাবীগুলি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের সচিবকে চিঠি দিয়ে রাষ্ট্রপতি পেপার মিল দুটির বিভিন্ন সমস্যা জানতে চেয়েছেন। আজ আই এন টি ইউ সির সভাপতি মানবেন্দ্র চক্ৰৱৰ্তী এই প্রতিবেদকের সঙ্গে দীর্ঘ টেলিফোনিক বাৰ্তালাপে জানান, ‘মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত অভিযুক্তরা রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা ভিক্ষা চেয়ে আবেদন করেন, এবং আমরা দীর্ঘ ১৬ মাস বেতন না পাওয়া প্রায় নিঃস্ব হয়ে যাওয়া শ্রমিকরা রাষ্ট্রপতির কাছে আত্মহত্যার দাবী জানাবাে, এ ছাড়া আমাদের সামনে আর কোনও বিকল্প পথ খােলা নেই।
তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনােয়ালের সঙ্গে ৮ বার সাক্ষাৎকরেছিলাম, বরাকের মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য এবং বিধানসভার উপাধ্যক্ষ দিলীপ পালের কাছে অসংখ্য বার গিয়েছি শুধুই প্রতিশ্রুতির পর প্রতিশ্রুতির ছাড়া কিছুই পাওয়া যায়নি। স্বয়ং প্রধানমন্ত্ৰী পাঁচগ্রামে জনসভায় কাছাড় পেপার মিল খােলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি তা রক্ষা করেননি। পেপার মিল দুটি সম্পর্কে সব ফাইল প্রধানমন্ত্রীর অফিসে পড়ে আছে বলে অভিযােগ করেন চক্ৰৱৰ্তী। তিনি বলেন শিলচরের সাংসদ সুস্মিতা দেব প্রধানমন্ত্রীর কাছে মিলটি খােলার জোরাল দাবী জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে একটি মাত্র জবাব দিয়ে দায়িত্ব পালন করেছে।
আজ দিল্লীর এক সূত্র জানান কেন্দ্রীয় সরকার পি পি পি মডেলের মাধ্যমে পেপার মিল দুটি চালু করে বেসরকারী সংস্থার হাতে সিংহভাগ তুলে দিতে চাইছে, দু-দুবার টেণ্ডার ডাকার পরেও কোনও বেসরকারী সংস্থা এগিয়ে আসেনি। নতুন করে মিল দুটি পুনৰ্জীৱন করা সম্ভৱ নয় বলে অভিমত ব্যক্ত করেছে অধীকাংশ বেসরকারী সংস্থা। অসম বিধানসভার বিরােধী দলপতি দেবব্রত শইকীয়া আজ অভিযােগ করেছেন কোটি কোটি টাকা খরচা করে ‘এ্যাডভান্টেজ আসাম’ শীর্ষক বিশ্ব শিল্প বিনিয়ােগ সন্মেলন আয়ােজন করা হলাে, অথচ রাজ্য সরকার মিল দুটি চালু করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের মুখাপেক্ষিহয়েছে। ১৮০০ কোটি টাকা রাজ্য সরকারই ব্যয় করতে পারে।
0 comments: