গুয়াহাটি :
অসমে চা বাগানগুলিতে অত্যধিক মাত্রায় রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে চায়ের গুণগত মান নষ্ট হচ্ছে। জমির উৎপাদন ক্ষমতাও কমে যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনােয়াল জনতা ভবনে এক বৈঠকে চা বাগানগুলিতে অত্যধিক রাসায়নিক সার ব্যবহার কমিয়ে জৈব (অর্গানিক) সার ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন। বিধানসভায় কৃষিমন্ত্রী অতুল বরা জানিয়েছেন, ধানবীজ, কৃষি সামগ্রী সার, ঔষধ প্রভৃতি সরবরাহের ক্ষেত্রে কৃষি বিভাগ কৃষকদের সময়ে সময়ে পরামর্শ দিয়ে থাকে।
রাজ্যের কৃষি বিভাগ কৃষকদের মধ্যে সয়েল হেলথ কার্ড বিতরণ করে থাকে এই কার্ডে পরামর্শ দেওয়া হয় কোন জমিতে এবং কোন ফসলে কি ধরণের রাসায়নিক সার, কীটনাশক ঔষধ ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু রাজ্য সরকারের কৃষি বিভাগের অবহেলা এবং কৃষকদের সচেতনতার অভাবে নিম্ন অসম, মধ্য অসম এমনকি বরাক উপত্যকার বিভিন্ন ফসলি জমিতে অত্যধিক পরিমাণে রাসায়নিক সার, কীটনাশক ঔষধ ব্যবহারের ফলে জমির উৎপাদন ক্ষমতা কমে যাচ্ছে এবং অনিয়ন্ত্রিত ভাবে কীটনাশক ঔষধ ব্যবহারের ফলে উৎপাদিত শাক-সবজি বিষাক্ত হয়ে পড়ছে৷ মানুষের খাদ্যে অনুপুযুক্ত যা স্বাস্থ্যর পক্ষে ক্ষতিকারক হচ্ছে বলে ভুরি ভুরি অভিযােগ পাওয়া যাচ্ছে, কৃষি বিভাগ নির্বিকার।
দরং জেলার খারুপেটীয়া, মিসামারি, দৈ পাম, দল গাঁও বরপেটার জেলার মন্দিয়া, কলগাছিয়া, বাক্সা জেলা, নগাঁও জেলা, হােজাই জেলার হােজাই লংকা, মরিগাঁও জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকরা প্রয়ােজনের তুলনায় অত্যধিক পরিমাণ সার ব্যবহার করছে বলে অভিযােগ এসেছে।
নাইট্রজেন, ফসফরস, পটাস প্রভৃতি সার নিয়ম মতাে ব্যবহার করা হচ্ছে না এ ছাড়াও বেশি ফসলের আশায় লাউ, পটল, কাঁকরােল প্রভৃতি আগাম বা অসময়ে ফলনের জন্য রাসায়নিক সারের মাত্রা বাড়িয়ে দেওয়া হয় যাতে বাজারে দাম বেশি পাওয়া যায়। তরমুজের ভেতরের রং টকটকে লাল রাখার জন্য বিষাক্ত হরমন ব্যবহার করা হচ্ছে। অধিকাংশ ফসলে যথেচ্ছারভাবে হরমন ইংজেকশন ব্যবহার করা হয়। মাছ-মাংস সতেজ ও টাটকা রাখার জন্য বিষাক্ত রাসায়নিক ফর্মালিন ব্যবহার করা হচ্ছে।
দরংয়ের ওয়াকিবহাল মহল সূত্রে জানা গেছে নিম্ন অসমে শয়ে, শয়ে সার এবং কীটনাশক ঔষুধের দোকান খুবই সহজ লােভ্য কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই, যারা এই অত্যধিক রাসায়নিক সার ব্যবহার করে বাণিজ্যিকভাবে সবুজ ফসল ফলাচ্ছে তারা কিন্ত ব্যক্তিগত ভাবে সেই সব শাক-সবজি খান না।
নিজস্ব ভাবে জৈব সার ব্যবহার করে সামান্য উৎপাদন করে থাকে। হােজাই জেলার এক সূত্র জানান হােজাই মহকুমাই শ শ বিঘা জমিতে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ব্যবহার করে ফসল ফলাচ্ছে তার অধিকাংশ বরাক উপত্যকা, ত্রিপুরা, মিজোরাম এবং নাগাল্যাণ্ডে পাঠানাে হয়। কৃষি বিভাগের ন্যূনতম নিয়ন্ত্রণ নেই। বিষাক্ত শাক-সবজিতে গুয়াহাটিসহ রাজ্যের বিভিন্ন বাজার ভরে গেছে। গুয়াহাটি মহানগর সহ রাজ্যের কোথাও ভেজাল ছাড়া দুধ পাওয়া যায়না না। কোনও ব্যাপারেই পরিবর্তনকামী সরকারের কোনও নজর নেই।
0 comments: