চিতা বাঘের মাংস খাওয়ার ঘটনায় উদ্বিগ্ন প্ৰমিলা বলেন, মানুষের মস্তিষ্কের বিকৃতি ঘটেছে
অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি ৩০ মাৰ্চঃ অসমের কাজিরঙ্গা রাষ্ট্ৰীয় উদ্যানে বিশ্বের এক খড়গ বিশিষ্ট বিপন্ন প্ৰজাতির গণ্ডারের আবাস ভূমি৷ গণ্ডারের খড়গ মারণ রোগের মহৌষধ হিসাবে ব্যবহারেরোগ মুক্তি ঘটে এই কু-সংস্কারের বশবৰ্তী হয়ে রাজ্যে নৃশংসভাবে গণ্ডারহত্যার ঘটনা ঘটেই চলেছে৷ তা কমার লক্ষণ দেখা না গেলেও কাজিরঙ্গা রাষ্ট্ৰীয় উদ্যানে গণ্ডারের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে৷ রাষ্ট্ৰীয় উদ্যানে গণনার ফলে গত ২০১৫ সালের তুলনায় মাত্ৰ ১২ টি গণ্ডার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪১৩ টি৷ গত কাল কাজিরঙ্গা কৰ্তৃপক্ষ এই গণনার ফল প্ৰকাশ করেছে৷ রাজ্যের মুখ্য বন সংরক্ষক (বন্যপ্ৰাণী) এন কে বাসু জানান, গণনার জন্য এক টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হয়েছিল৷ প্ৰায় ৩০০ বনকৰ্মীকে গণনার কাজে নিয়োগ করা হয়৷ বাসু দাবি করেন গত কয়েক বছর ধরে গণ্ডার হত্যা কমেছে৷ বনমন্ত্ৰী প্ৰমিলা রাণী ব্ৰহ্ম গণ্ডারের সংখ্যা বৃদ্ধিতে সন্তুোষ প্ৰকাশ করে আজ বলেন, কাজিরঙ্গার অনেক এলাকায় ঘাসের জঙ্গল সাফ করা হয়নি এবং পোড়ানো সম্ভব হয়নি যার ফলে অনেক ভিতরের এলাকায় গণ্ডার গণনা অসুবিধার সৃষ্টি হয়, তার আশা আরও প্ৰায় ৫০ টি গণ্ডার বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে৷ সি সি এফ এন কে বাসু জানান, কাজিরঙ্গা রাষ্ট্ৰীয় উদ্যানে ১০০টির বেশি বাঘ আছে৷ একই জঙ্গলে বাঘ, গণ্ডার পাশাপাশি থাকতে পারে না বলে বন বিশেষজ্ঞদের অভিমত ঠিক নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন৷ বনমন্ত্ৰী প্ৰমিলা রাণী ব্ৰহ্ম জানান, কাজিরঙ্গা ৰাষ্ট্ৰীয় উদ্যানের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করার জন্য দুইটি ব্যাটেলিয়ান তৈরি করে হাতে অস্ত্ৰ তুলে দেওয়া হয়েছে৷ কাজিরঙ্গায় বন্য জন্তুদের উপর নিরিক্ষণের জন্য মানববিহীন অত্যাধুনিক ড্ৰোণ ব্যবহারের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে৷ এই ড্ৰোণ কেনার জন্য টেণ্ডার ডাকা হয়েছে৷ বনমন্ত্ৰী প্ৰমিলা রাণী ব্ৰহ্ম রাজ্যে বিভিন্ন এলাকায় চিতা বাঘের আক্রমণের ঘটনা বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্ৰকাশ করে বলেন, লক্ষ্য করা যাচ্ছে একাংশ মানুষ বিষ প্ৰয়োগ করে, ফাঁদ পেতে চিতা বাঘগুলিকে হত্যা করছে এমনকি তার মাংসও খাচ্ছে৷ মানুষের মস্তিষ্কের বিকৃতি ঘটেছে, নিজের সন্তানসম মেয়েকেও ধৰ্ষণ করতেও কুণ্ঠাবোধ করছে না৷ এই মানসিকতা পরিবৰ্তন ছাড়া জঙ্গলের পশু, পাখি রক্ষা করা যাবে না৷ গত এক সপ্তাহে তিনসুকীয়া, গোলাঘাট, ডিফু, বোকাখাত, দেরগাঁও প্ৰভৃতি জায়গায় ছাড়াও গুয়াহাটি মহানগরের মালিগাঁও পাণ্ডু, কামাখ্যা অঞ্চলে বহু চিতা বাঘ জঙ্গল ছেড়ে বাইরে এসেছে বেশ কয়েকটিকে ধ্বা হয়েছে৷ নগাঁও জেলার কলিয়াবরের শাখামুঠি চা বাগানে শ্ৰমিকরা বিষ খাইয়ে একটি চিতা বাঘ হত্যা করে তার মাংস খেয়েছে, পুলিশ দুই শ্ৰমিককে গ্ৰেফতার করেছে৷ রাজ্যে বিভিন্ন জায়গা থেকে বাঘের হাড়, চামড়া, দাঁত প্ৰভৃতি উদ্ধার করা হয়েছে৷ রাজ্যে চিতা বাঘের আক্রমণের পাশাপাশি হাতি মানুষের সংঘাতও বৃদ্ধি পেয়েছে৷ গোয়ালপাড়া জেলায় এবং অণাচল প্ৰদেশের সীমান্তবৰ্তী অঞ্চলে হাতিদের আক্রমণের ফলে দুইজন মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে বেশ কিছু ঘর-বাড়ী ভাঙচুর করেছে বুনো হাতির দল৷ রাজ্যের বন কেটে বসতি স্থাপনের ধূম পড়ে গেছে, হাতিদের যাতায়াতের করিডোরগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে৷ তাই জঙ্গলের হাতিএবং চিতা বাঘগুলি খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে হানা দিচ্ছে৷ বাঘ এবং হাতি লোকালয়ে এসে লোভি মানুষের হাতে পড়ে মারা পড়ছে৷ জন পদে খাদ্যের খোঁজে এসে নিজেরায় মানুষের খাদ্য হয়ে যাচ্ছে৷
0 comments: