বাজেট নিয়ে হিমন্তর প্রশংসায় পঞ্চমুখ মুখ্যমন্ত্রী : দুই মেরুতে শাসক-বিরােধী

তরুণ গগৈ সরকার বিগত ১৫ বছরে ৫০-৬০ টির বেশি প্রকল্প সম্পূর্ণ করতে পারেন নি : হিমন্ত বিশ্ব শর্মা 

গুয়াহাটি : বিদেশিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, প্রদূষণমুক্ত, এই তিন লক্ষ্য পূরণে অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা স্পষ্ট নীতি গ্রহণ করে সুন্দৰ বাজেট প্রস্তুত করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সােনােয়াল বাজেট পেশের পর তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে সাংবাদিকদের কাছে এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, বাজেটের অন্যতম লক্ষ্য বরাক-ব্ৰহ্মপুত্র, সমতল-পাহাড় অঞ্চল সব জনগােষ্ঠির সার্বিক বিকাশ ত্বরান্বিত করা। মূল্য লক্ষ্য সবকা। সাথ সবকা বিকাশ’। রাজ্যের ৩৩ টি জেলাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে সবধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। রাজ্যের প্রত্যেকটি বিধানসভা কেন্দ্রে ২০ কোটি টাকা করে বরাদ্দ করা হবে। তার মধ্যে দুটি করে আদর্শ গ্রাম প্রতিষ্ঠা করা হবে। দল-মত নির্বিশেষে সব বিধায়কদের কেন্দ্রে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে। কোনও বৈষম্য করা হয়নি। শিশু এবং মহিলা বিকাশের সঙ্গে যুব উন্নয়ন, কৃষক শ্রমিক কল্যাণ সব মিলিয়ে রাজ্য সরকার তাদের বাজেটে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। 
পাশাপাশি অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা তারই পেশ করা বাজেট সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে সাংবাদিকদের বলেন, তরুণ গগৈ সরকার বিগত ১৫ বছরে ৫০-৬০ টির বেশি প্রকল্প গ্রহণ করতে পারেন নি। তিনি শুধু সূতা-কম্বলই বিলিয়েছেন। মিষ্টি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া থেকে আগে নিজে মিষ্টি খাক, হজরত মহম্মদের এই উদ্ধৃতি দিয়ে কংগ্রেসের দিকে মন্তব্য ছুঁড়ে তিনি বলেন, ১২৫ বছর পা দিয়েও কংগ্রেস তাদের পরম্পরার বাইয়ে যেতেই পারেনি। শুধুই বাহ্যিক আড়ম্বর। গত ১৫ বছরে তরুণ গগৈ শুধুই প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেছেন। কাজিরঙাতে এয়ারপাের্ট হবে, কাছারি থেকে আমিনগাও পর্যন্ত রূপওয়ে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। কোনাে ক্ষেত্রেই তাদের প্রকল্পগুলি রূপায়ন করতে পারেনি। তারই এই প্রথম ডিজিটাল বাজেট সম্পর্কে বলেন, বিধায়কমন্ত্রীদের ট্যাবলেট দেওয়া হয়েছে। তাতেই বাজেটের পূর্ণ প্রতিবেদন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিধায়ক-মন্ত্রীরা কম্পিউটার না জানলেও ট্যাবলেট থেকে শিক্ষা নিতে পারেন। 
কংগ্রেসের প্রাক্তন মন্ত্রী রকিবুল হােসেইন গুরুতর অভিযােগ করে বলেন, অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বাজেট ভাষণের শুরুতে বিধানসভার অধ্যক্ষ হিতেন গােস্বামীকে অসম্মান করেছেন। ‘মাননীয় অধ্যক্ষ’ বলে তিনি ভাষণ শুরু করেন নি। তার বাজেটে বাহ্যিক আড়ম্বরই বেশি। কংগ্রেস আমলের তৈরী রাস্তা-ঘাট, সেতু, বিভিন্ন প্রকল্প পুনরায় উদ্বোধন করে কৃতিত্ব নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। বাজেটে বলা হয়েছে, ১৬ লক্ষ মানুষকে বৃদ্ধ পেঞ্চন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সঙ্গে উল্লেখ করেছেন ৩,২০ লক্ষ মানুষের মধ্যে সকল বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে এই পেঞ্চনের আওতাই আনা হবে। যা প্রায় ৩০-৩৫ শতাংশ হবে। তবে কি করে বললেন মাত্র ১৬ লক্ষ ? বিগত বাজেটে রাজ্যের বেকার যুবকদের ১ লক্ষ করে দেওয়া হবে ঘােষণা করেছিল। এবার বাজেটে তা উল্লেখই করা হলাে না। বলা হলাে বেকারদের ২ লক্ষ করে দেওয়া হবে। কোনটা সত্যি, কোনটা মিথ্যা।


কংগ্রেসের বিধায়ক রূপজ্যোতি কুৰ্মী বলেন, অর্থমন্ত্রী গত বছর ৪-৩০ ঘণ্টা ভাষণ দিয়েছিলেন। এবার ভাষণ দিলেন ২-৩০ ঘণ্টা। বিধানসভার প্রাক্তন অধ্যক্ষ প্রণব গগৈ তাদেরকে উন্নতমানের ট্যাবলেট দিয়েছিলেন। এবার বিজেপি সরকার প্রথম দিয়েছে বলে দাবি করে নিম্ন মানের ট্যাবলেট দিলেন। চা শ্রমিকদের মােবাইল। সহ অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা এই বাজেটে কিছুই রক্ষা করা হয়নি। তিনি শুধু স্বপ্ন দেখিয়েছেন। 
এআইইউডিএফ প্রধান বদরুদ্দিন আজমল বাজেটের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, হিমন্ত বিশ্ব শর্মার বাজেট পাঠ শুনলাম। সুন্দর ভাষণ, সাহিত্য হিসেবে খুব ভালাে। কিন্তু উন্নয়নমুখী বাজেট নয়। অর্থমন্ত্রী বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে নগদ অর্থ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। যা আসন্ন পঞ্চায়ত নির্বাচনের আগে প্রলােভন ছাড়া কিছুই নয়। দলের বিধায়ক আমিনুল ইসলাম বলেন, এই বাজেটে সাহিত্যিক গুণে পরিপূর্ণ। প্রতিটি শব্দ, বাক্য চয়ন খুব ভালাে হয়েছে। জনসাধারণের সমস্যা সমাধানে কোনও রাস্তা দেখাতে পারেন নি।

SHARE THIS

No. 1 Web Media in North-East India. Maintained and Published by Saiyad Bulbul Jamanur Hoque on behalf of Save Media Solution (A unit of SAVE).

0 comments: