বন্যার থেকে ধ্বসের সমস্যা ভয়াবহ : বাজেটে উল্লেখ নেই
গুয়াহাটি : ২০১৫-১৭ অর্থবছরে রাজ্যের ২৭ টি জেলায় ৬২, ১৬৫ বিঘা জমি নদীতে তলিয়ে গেছে। বরাক উপত্যকার তিনটি জেলাসহ ৩৭,০৫৩ জন মানুষ বন্যায় সর্বস্বান্ত হয়েছিল। বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে এআইইউডিএফের মামুন ইমদাদুল হক চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে রাজস্ব বিভাগের মন্ত্রী পল্লবলােচন দাসের এই তথ্য জানানাের পর এআইইউডিএফ বিধায়ক সন্তুষ্ট হননি।
বিধানসভায় অর্থমন্ত্রীর বাজেট ভাষণের ওপর বিতর্কে অংশগ্রহণ করে ১৫ বছর সরকারের অভিজ্ঞতাপুষ্ট প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ বাজেটের সমালােচনা করে বলেন, প্রতিবছর রাজ্যের বন্যায় ৫ লক্ষ হেক্টর করে জমি তলিয়ে যাচ্ছে। রাজ্যে বন্যা থেকেও ভয়াবহ সমস্যা হচ্ছে ধ্বসের সমস্যা। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের পরিকল্পনা কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। নদীতে তলিয়ে যাওয়া জমিকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে এক অত্যাধুনিক ম্যাকানিজম’ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলােচনাও চলছিল। বর্তমান সরকার তাদের বাজেটে সেই ধ্বসের সমস্যাকে কোনও গুরুত্বই দেওয়া হলাে না। প্রসঙ্গত হিমন্ত বিশ্ব শর্মার বাজেটে নদী ভাঙন বা ধ্বসের সমস্যাকে গুরুত্ব না দিলেও ব্রহ্মপুত্র বরাক নদীর তলদেশ খননের ওপর গুরুত্ব দিয়ে অর্থ সংস্থানের ব্যবস্থা রেখেছে।
বর্তমান অর্থমন্ত্রী হিমন্তর কটু সমালােচনা করে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বলেন— তার সময় রাজ্যের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব কে পালন করেছিলাে ? হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মাই সেই দায়িত্ব পালন করেছেন। তখন তিনি ব্যর্থতার অভিযােগ তােলেন নি কেন?’ বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা বাতিল করা সম্পর্কে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৫৯ সাল থেকে রাজ্য সরকার বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা ভােগ করে আসছে। অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী স্পেশাল প্যাকেজের বদলে রাজ্যের বিশেষ মর্যাদার দাবী করেছে। বিশেষ মর্যাদা বাতিল হওয়ার ফলে গুজরাট, মহারাষ্ট্রের মতাে উন্নত অর্থনৈতিক ব্যবস্থার রাজ্যের সঙ্গে দারিদ্রতম অসমকেও একই সারিতে ফেলা হলাে। আমার বিরুদ্ধে অভিযােগ, আমি নাকি রাজ্যের মানুষকে মশারি আর সূতা বিলিয়েছি। দারিদ্রতম মানুষগুলির মধ্যে সূতা কম্বল বিতরণের ফলে কতটা উপকৃত হয়েছে তা আমি তদানীন্তন রাষ্ট্রপতিকে সােণাপুরে নিয়ে গিয়ে দেখিয়েছি। মহিলা কলেজসহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি ধুকছে। আমি বিদেশে গিয়েছি, শুধু ঘােরার জন্যে নয়, আমি ভিয়েতনামে গিয়েছি মৎস ব্যবস্থা প্রত্যক্ষ করেছি।
এ্যডভান্টেজ আসাম করে দেশ-বিদেশের বড়বড় শিল্পপতিদের ডেকে এনে এরাজ্যে বিনিয়ােগের চেষ্টা করা হচ্ছে। একথা উল্লেখ করে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি কেন ডাকতে যাব। তারাই আসবে। আমি শিল্পপতি রতন টাটাকে বলেছি, আপনি আসামে কৃষি উন্নয়নের ওপর জোর দেন। কৃষিতে উন্নতি হলেই আপনার কোম্পানীর ন্যনাে কিনবে। রাজ্যে বিদ্যুৎ নেই। এই বাজেটে ২০ পয়সা ইলেকট্রিক ডিউটি চাপানাের পর পুনরায় অতিরিক্ত ৫ শতাংশ ইলেকট্রিক ডিউটি চাপানাে হলাে।
শাসকদলের দেবানন্দ হাজরিকা ডিজিটাল বাজেটের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এআইইউডিএফের আমিনুল ইসলাম এই বাজেটের বাস্তব ছবির তুলনায় ভাষার কারিকরী, সাহিত্য গুণ বেশি। রাজ্যের সংখ্যালঘু জনগােষ্ঠীর সার্বিক উন্নয়নে বাজেটে বিশেষ কোনও সুবিধা দেওয়া হয় নি।
0 comments: