ভাষা শহীদদের আর্থিক সাহায্যে : ৫৭ বছর পরেও মন্ত্রী জানান তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে

অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি : 
আবার দায়সারা গােছের জবাব পাওয়া গেল। চলতি বিধানসভায় বাজেট বক্তৃতার বিতর্কের সময় অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল বরাক উপত্যকার ভাষা শহীদদের স্বীকৃতি জানিয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে কিনা না, জবাবে শর্মা জানিয়েছিলেন, নিহত ব্যক্তিদের তালিকা দাখিল করুন বিবেচনা করে দেখা যেতে পারে। প্রশ্ন করেছিলেন বরাকের কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ। 
আজ সমবার বিধানসভায় কংগ্রেস বিধায়ক সেই কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থের প্রশ্নের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী সর্বনন্দ সনােয়লের পক্ষে সংসদীয় পরিক্রমা মন্ত্রী চন্দ্র মােহন পাটোয়ারী একই ভাবে দায়সারা ভাবে জবাব দিয়ে বলেন, বাংলাভাষা আন্দোলনে ১৯৬১ সালের ১৯ মে শিলচর রেলওয়ে ষ্টেশনে পুলিশের গুলি চালনার ফলে ১১ জন ব্যক্তি এবং ১৯৮৬ সালের ২১ জুলাই করিমগঞ্জ জেলায় দুই জন ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছিল। ১৯৭২ সালে বাংলাভাষার দাবিতে কোনও আন্দোলন হয়নি। এই ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্বীকৃতি এবং আর্থিক সাহায্য দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের যে সদৃচ্ছা নেই, সরকার যে প্রস্তুত নয় মন্ত্রী পাটোয়ারীর জবাবেই তা টের পাওয়া গেছে। মন্ত্রী ১৯৬১ সালের ঘটনার ৫৭ বছর পর জবাবে জানান, তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। 
মন্ত্রী পাটোয়ারী জানান, ১৯৪১ সালের যে ১১ জন যুবক-যুবতীর মৃত্যু হয়েছিল তাঁরা হলেন— গােপেশ পালের পুত্র শশীন্দ্র চন্দ্র পাল, সুরেন্দ্র সরাকারের পুত্র সুনিল সরকার, হরিশ চন্দ্র বিশ্বাসের পুত্র হিতেশ চন্দ্র বিশ্বাস, সঞ্জিব পুরকায়স্থের পুত্র সুকমল পুরকায়স্থ, রমণী ভট্টাচার্যের কন্যা কমলা ভট্টাচার্য, চন্দ্র কান্ত সূত্রধরের পুত্র চণ্ডি চরণ সূত্রধর, কানাই লাল নেওগি (রেলওয়ে পার্শেল ক্লার্ক), নলিনি রঞ্জন দাসের পুত্র কুমুদ রঞ্জন দাস, যুগেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথের পুত্র তরণী কান্ত দেবনাথ, বীরেন্দ্র সূত্রধর এবং সতেন্দ্র দেব। এবং ১৯৮৬ সালে করিমগঞ্জ জেলায় দ্বিপেন্দ্র নাথ দাসের পুত্র জিসু দাস এবং যােগেশ চন্দ্র দেবের পুত্র জগন্ময় দেব মােট ১৩ জনের মৃত্যু হয় এছাড়াও ১৯৯৬ সালে বিষ্ণু প্রিয়া মনিপুরী ভাষা আন্দোলনে করিমগঞ্জ জেলায় সুরেশ চন্দ্র সিনহার কন্যা সুদেষ্ণা সিনহার মৃত্যু হয়। 
মন্ত্রী পাটোয়ারী এক বারের জন্যেও মৃতদের ‘ভাষা শহীদ’বলে উল্লেখ করেন নি। আর্থিক সাহায্যের ক্ষেত্রেও একই জবাব দেন তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এর আগে রাজ্য সরকার অসম আন্দোলনের শহীদদের আর্থিক সাহায্য দিয়েছে, বােড়াে আন্দোলন, কাবি আংলং আন্দোলন আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা সরকার ঘােষণা করেছে। আশির দশকের আগে পরে রাজ্যে সংগঠিত নেলী, লাউখােয়া প্রভৃতি জায়গায় বিভিন্ন সংঘর্ষে কয়েক হাজার সংখ্যালঘু মানুষের মৃত্যু হয়েছিল রাজ্যের সংখ্যালঘু সংগঠনগুলাে দীর্ঘদিন ধরে নিহত ব্যক্তিদের নিকট আত্মীয়দের আর্থিক সাহায্য দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে, কিন্তু সরকারের দিক থেকে কোনও সাড়া নেই।

SHARE THIS

No. 1 Web Media in North-East India. Maintained and Published by Saiyad Bulbul Jamanur Hoque on behalf of Save Media Solution (A unit of SAVE).

0 comments: