কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃবৃন্দের কাছে আমি একজন ওপেন বুক’, রাষ্ট্রীয় রাজনীতিতে যাওয়ার ইঙ্গিত হিমন্তের

অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি : 
নর্থ ইষ্ট ডেমােক্রেটিক অ্যালায়েন্সের (নাডা) চেয়ারম্যান হিসাবে অসমের অর্থ, শিক্ষা, এবং স্বাস্থ্য বিভাগের মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ত্রিপুরা, নাগাল্যাণ্ড এবং মেঘালয়ের সরকার বদলে উল্লেখযােগ্য ভূমিকা পালন করায় বিজেপি নেতৃত্ব যারপরনায় খুশী, বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব হিমন্ত বিশ্ব শর্মাকে রাজ্যের রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে তুলে এনে রাষ্ট্রীয় রাজনীতিতে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি আগরতলায় বিজেপি সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শেষে হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সঙ্গে একান্তভাবে কথা বলে পিঠ চাপড়ে বলেছিলেন— “আচ্ছা কাম কিয়্যা’। 
স্থানীয় এক টিভি চ্যানালের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা স্বয়ং রাষ্ট্রীয় রাজনীতিতে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন— নাডার দায়িত্ব নেওয়ার পর উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজনৈতিক দলগুলির কাছেনাডার গুরুত্ব অনেক বেড়েছে। আমাকে শুধু রাজ্যেই নয় রাষ্ট্রীয় স্তরেও কাজ করতে হচ্ছে, ঘরে বাইরে সমানভাবে কাজ করে যাচ্ছি। ত্রিপুরা, নাগাল্যাণ্ড এবং মেঘালয়ের রাজনৈতিক কূট-কৌশল তৈরি করার জন্য দীর্ঘ ৬-৭ মাস থেকে প্রস্তুতি চালাচ্ছিলাম। 
কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃবৃন্দের কাছে আমি একজন ‘ওপেন বুক’, তারা চিন্তা করছে, আমাকে রাষ্ট্রীয় রাজনীতিতে নিয়ে যেতে হলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি এবং সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের অনুমােদনের প্রয়ােজন আছে। দীর্ঘ ২৩ বছর কংগ্রেস দলের বিভিন্ন পদে কাজ করার অভিজ্ঞতার কথার জানিয়ে হিমন্ত বলেন— কংগ্রেস দলের নেতারা প্রভুর মতাে আমরা সবাই ভৃত্যের মতাে সেখানে ছিলাম। আমরা রাহুল গান্ধীর ড্রয়িং রুম পর্যন্ত যেতে পেরেছি, কিন্তু তার কিচেন রুমে যাওয়ার অধিকার ছিল না, আমরা বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের কিচেন রুমে গিয়ে ভাত খেয়েছি। ১৩-১৪ বার ভাত খেয়েছি। 
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ, ছােনিয়া গান্ধীর কিচেন রুমে গিয়ে ভাত খেয়েছেন কিনা সন্দেহ আছে। কারণ রাহুল গান্ধীর ড্রয়িং রুমে প্রবেশ করতে নিরাপত্তারক্ষীদের হাজার প্রশ্নের মুখে পড়তে হত। রাহুল গান্ধীরা নিজেদেরকে প্রভু হিসাবে এবং তাদেরকে ভৃত্য হিসাবে গণ্য করে। কিন্তু বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ বিজেপির কর্মীদের বাড়িতে গিয়ে মাটিতে বসে ভাত খেয়ে আসেন। সাধারণ খাওয়া সঙ্গে জলের বােতল থাকে সেই খাবার কেউ পরীক্ষাও করে দেখে না। বিজেপিকে তার স্বাভাবিক ঘর’ মন্তব্য করে বলেন বিজেপি নেতারা বিমানের ইকনােমিক ক্লাসে যাতায়াত করেন। কর্মীদের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক। 
ত্রিপুরার ২৫ বছর বামপন্থী শাসনের অবসানে তার কোনও কৃতিত্ব নেই বলে মন্তব্য করে নাডার চেয়ারম্যান হিমন্ত বলেন, সেখানে বিগত নির্বাচনের ৬-৭ মাস আগে থেকেই অসমের প্রায় ৩০০ জন ছেলে-মেয়ে নিরলসভাবে ‘ত্রিপুরার টিম’ হিসাবে কাজ করে গেছে। বিজেপি নেতা রাম মাধব সর্বতােভাবে গাইড করে গেছেন। মাথায় ছিলেন সভাপতি অমিত শাহ। ত্রিপুরায় অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয়েছে। 
প্রথম কাজ ছিল তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়কদের বিজেপি দলে নিয়া আসা। কংগ্রেসের আহমদ প্যাটেল, কমল নাথ, কেন্দ্রীয় কংগ্রেস নেতারা মেঘালয়ে কৌশলগতভাবে ভুল করেছেন। ত্রিপুরায় নির্বাচন ফলাফল ঘােষণার প্রাকমূহূর্তে অমিত শাহ তাকে নির্দেশ দিলেন ‘অবিলম্বে শিলং যাও, এবং করনাড সাংমাদের সঙ্গে যােগাযােগ করে সরকার গঠনের চেষ্টা কর। আমি দেখলাম করনাডরা তুরায় আছে, সেখান থেকে গুয়াহাটি হয়ে শিলং যাবে তাই আমি গুয়াহাটি বিমান বন্দরের সংলগ্ন এক হােটেলে শিবির পাতলাম এবং করনাডকে অবিলম্বে বিমান বন্দর থেকে তার হােটেলে যাওয়ার পরামর্শ দিলাম। যথারীতি করনাড সাংমা এলেন ফলপ্রসূ আলােচনাও হলাে। আর তুরার ভৌগলিক অবস্থান সম্পর্কে জ্ঞান না থাকা কংগ্রেসি নেতারা সরাসরি শিলং চলে গেলেন, প্রথম চালেই তারা ভুল করলেন।

SHARE THIS

No. 1 Web Media in North-East India. Maintained and Published by Saiyad Bulbul Jamanur Hoque on behalf of Save Media Solution (A unit of SAVE).

0 comments: