হাজার বিরােধিতার মধ্যেও আর এস এস সংশােধনী বিলটির সম্পর্কে তাদের সিদ্ধান্তে অনড়ঃশঙ্কর দাস
গুয়াহাটি : আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষদের এদেশে স্থায়ীভাবে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরাকার সংসদে আইন আনতে চাইছেন। বর্তমানে এই আইন সংক্রান্ত বিলটি যৌথ সংসদীয় কমিটির বিবেচনাধীন। কমিটির চেয়ারম্যান রাজেন্দ্র আগরওয়ালার কাছে অসমের প্রায় ১৪টি সংগঠন স্মারক পত্র দিয়ে বিলটির তীব্র বিরােধিতা করেছে।
বাঙালি যুব ছাত্র ফেডারেশনের প্রতিনিধিরা বিলটি সমর্থন করলেও তাদের দাবি ধামা চাপা পড়ে যায়। পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল নেতৃত্বও বিলটিকে সাম্প্রদায়িক আখ্যা দিয়ে অগ্রাহ্য করেছে। রাজ্যের কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি নেতা অখিল গগৈ বিলটির বিরুদ্ধে রাজ্য জুড়ে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। সত্র মহাসভা প্রথমে বিলটি সমর্থন করেও শেষ পর্যন্ত সরে আসে। বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষদের এ দেশে আশ্রয় দেওয়া। কিন্তু রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্ব বিলটিকে সমর্থন করে জোরাল বক্তব্য রাখছেন৷ বরাক ও ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার অধিকাংশ বিজেপি নেতারাও বাঙালি হিন্দুদের স্বার্থ সম্পর্কিত সংশােধনী বিলটি সম্পর্কে বিস্ময়করভাবে মৌনব্রত অবলম্বন করেছে।
বরাকের একমাত্র ব্যতিক্রমী নেতা কেন্দ্রের প্রাক্তন মন্ত্রী কবিন্দ্র পুরকায়স্থ তিনি আজ জোরালভাবে বিলটি সমর্থন করে বলেন, তার সঙ্গে চেয়ারম্যান রাজেন্দ্র আগরওয়ালার কথা হয়েছে। হাজার বিরােধিতা সত্বেও সংসদে বিলটি পাশ হবেই, কেও আটকাতে পারবে না। আজ বিজেপির সাংসদ বিজয়া চক্রবর্তী গুয়াহাটিতে বিলটি সমর্থন করলেও জোরলােভাবে বক্তব্য রাখেন নি। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সােনােয়াল গত কাল দিল্লীতে বিলটি সম্পর্কে বেশি কিছু বললেন না। শুধু বলেন, যৌথ সংসদীয় কমিটির বিবেচনাধীন বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য না করায় ভালাে। এই সব বিরােধিতা, আন্দোলনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙঘ (আর এস এস) প্রবলভাবে বিলটির সমর্থনে এগিয়ে এসেছে।
আর এস এস উত্তর পূর্ব প্রান্তের প্রচার প্রমুখ শঙ্কর দাস আজ বিলটির সমর্থন করে বলেন, “তাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত বাঙালি হিন্দুদের সমর্থন করা। এন আর সির কাজের গতি প্রকৃতি সম্পর্কে তাদের আশংঙ্খ এন আর সি তালিকা তালিকা থেকে লক্ষ লক্ষ বাঙালি হিন্দুর নাম বাদ পড়বে এবং লক্ষ লক্ষ বিদেশীর নাম এন আর সিতে অন্তর্ভূক্ত হবে। ভয়ানক এ পরিস্থিতি থেকে বাঙালি হিন্দুদের রক্ষা করার জন্য আর এস এস কে ভাবতেই হবে।” তিনি বলেন, আগামি জুন মাসে এন আর সির চুড়ান্ত তালিকা প্রকাশ পাবে তার পরে দাবি আপত্তির জন্য আরও ২ মাসের সময় দেওয়া হবে। তার পরে অক্টোবর নাগাদ সংসদের অধিবেশন শুরু হবে।
তার আগে এই বিলটি সম্পর্কীয় যৌথ সংসদীয় কমিটির প্রতিনিধিরা অসম সফরে এসে বিভিন্ন মানুষের মতামত গ্রহণ করবে। তা এক দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংশােধনীয় বিলটিকে পাশ করানাে হবে। আগামি ২০১৯ লােকসভা নির্বাচনের আগে পর্যন্ত বিলটি পাশ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এই বিলটি সম্পর্কে হাজার বিরােধিতা হলেও আর এস এস তাদের সিদ্ধান্তে অনড় বলে মন্তব্য করেন শঙ্কর দাস। বরাক উপত্যকার বাঙালি হিন্দুদের সমস্যা সম্পর্কে তুলে বলেন, বরাকের কংগ্রেস সাংসদ সুস্মিতা দেব সংসদীয় কমিটির সদস্য হওয়া সত্বেও বাঙালি হিন্দুদের সমর্থনে এগিয়ে আসছেননা।বরাকের লক্ষ লক্ষ বাঙালি হিন্দুদের স্বার্থে সাংসদ শ্রীমতি দেব কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান আর এস এসর বিশিষ্ট নেতা শঙ্কর দাস।
0 comments: