অসমে নারী নির্যাতনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সােনােয়াল নারী নির্যাতনে দোষী অপরাধীদের কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তি প্রদানের অঙ্গীকার করে বলেন, দুর্নীতি প্রতিরােধে সরকার যেমন শূন্য সহনশীল নীতি গ্রহণ করেছে৷ নারী নির্যাতনের ক্ষেত্রেও শূন্য সহনশীল হবে সরকার।
রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনকে হুঁসিয়ার করে দিয়ে বলেন, নারী নির্যাতনের ঘটনায় পুলিশের গাফিলতি সহ্য করা হবে না। প্রতিটি ঘটনায় অতি সত্তর চার্জশিট দাখিল করেতে হবে। চার্জশিটের ক্ষেত্রে কোনও ফাঁক-ফোঁকর যেন না থাকে, একদম যেন নিখুঁত হয়, যাতে ধর্ষণের মতাে মারাত্মক অভিযােগে অভিযুক্ত উপযুক্ত শাস্তি পায়।
আজ বিধানসভায় বিজেপির বিধায়িকা আঙুরলতা ডেকা ও সুমন হরিপ্রিয়া, কংগ্রেসের বিধায়িকা রােজলিনা তিরকি ও নন্দিতা দাস প্রমুখদের উত্থাপিত জিরাে আওয়ার নােটিশের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের নারী নির্যাতন নিয়ে সরকারের দৃঢ় স্থিতির কথা তুলে ধরেন। সরকার মহিলাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযােগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যাতে তাৎক্ষণিকভাবে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করে তার জন্য রাজ্যের প্রত্যেকটি জেলার ডেপুটি কমিশনার, পুলিশ সুপার এবং প্রত্যেকটি থানাকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বলাৎকারের মতােই ঘটনাকে ‘সিরিয়াস ক্রাইম’ হিসাবে গণ্য করে ঘটনাগুলি দ্রুত বিচার প্রক্রিয়ার জন্য প্রত্যেকটি জেলায় ফাষ্ট ট্র্যাক কোর্ট স্থাপনের জন্য গুয়াহাটি হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন। এক মাসের মধ্যেই তা বাস্তবায়িত হবে।
নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে উপযুক্ত প্রশিক্ষণের জন্য ৩৬৬জনকে দেরগাঁওয়ের প্রশিক্ষণ শিবিরে পাঠানাে হয়েছে। বে-আইনী নারী পাচার প্রতিরােধ করার জন্য পুলিশ থানায় ৬৪টি মহিলা সেল খােলা হয়েছে। ১৮১ নম্বরের হেল্প লাইন’র ব্যবস্থা হয়েছে। রাজ্যের ৬৮ লক্ষ পরিবারে পুলিশ মােতায়েন করা সম্ভব নয়, জনগনকে সজাগ ও সচেতন হয়ে থাকতে হবে। বলাৎকারের মতাে ঘটনা এক সামাজিক ব্যাধি, বিকৃত মানসিকতা, তা দূর করার জন্য অপরাধীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতেই হবে। গত ৩০ বছরে রাজ্যে বহু অপরাধী বেঁচে গেছে। এই সামাজিক ব্যাধি দূর করতে সমাজে মূল্যবােধ ফিরিয়ে আনতে হবে।
রাজ্যের ১২৬জন বিধায়কই পুলিশ থানাগুলির সঙ্গে সম্পর্ক রেখে দোষী অপরাধীদের শাস্তির ব্যবস্থা ত্বরান্বিত হয় তা দেখতে হবে। বিজেপি বিধায়িকা আঙুরলতা ডেকাসহ অন্যান্যরা রাজ্যের ক্রমবর্ধমান নারী নির্যাতনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে পুলিশ প্রশাসনের দিকে আঙুল তােলেন, তারা বলেন, একজন ধর্ষিতা মহিলা সামাজিক সম্মান রক্ষায় থানায় যেতে ইতস্ততাবােধ করেন। সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশকে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে তা কিন্তু হচ্ছে না। পুলিশের গাফিলতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
0 comments: