রাজ্যের মানুষের স্বার্থ বিঘ্নিতকারি এমন কোনও সিদ্ধান্তই সরকার গ্রহণ করবে না : সর্বানন্দ সনােয়াল
গুয়াহাটি : প্রস্তাবিত নাগরিকত্ব বিল, ২০১৬ বাতিলের প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ আন্দোলন চলছে। পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছে। আজ এই প্রেক্ষাপটে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সােনােয়াল পুনরায় রাজ্যবাসীকে আস্বস্ত করে বলেন— ‘বিজেপি সরকার রাজ্যের মানুষের স্বার্থ বিঘ্নিত করে এমন কোনও সিদ্ধান্তই গ্রহণ করবে না। যৌথ সংসদীয় কমিটির কাছে শাসক বিজেপি দল এখনও কোনও মতামত পেশ করেনি, দল তাদের মতামত পেশ করার সময় রাজ্যের খিলঞ্জীয়া মানুষের স্বার্থ পূরণের সব চেষ্টায় করবে। রাজ্যবাসীর মতামতের বিরুদ্ধে যাবেই না। বর্তমান চলিত রাজ্যব্যাপী আন্দোলন প্রতিবাদ সম্পর্কে বলেন, রাজ্যবাসীকে আবেগিক করে আন্দোলন চালানাে হচ্ছে। তা বেশি দিন টিকবে না অচিরেই তার সমাপ্তি ঘটবে, আরও কিছুদিন অপেক্ষা করুন।’বরাক উপত্যকার পরিস্থিতি ক্রমশ খারাব হচ্ছে। বিচ্ছিন্নতাবাদী মানসিকতা গড়ে উঠছে।
এ কথা স্মরণ করিয়ে দিলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আর মাত্র কয়েকটা দিন বাদেই পরিস্থিতি শান্ত হবে। বরাকব্রহ্মপুত্র উপত্যকার মধ্যে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববােধ, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হতে দেওয়া হবেনা।মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সােনােয়াল আজ বিশ জন জেলার সাংবাদিকের রাজস্থান সফরের সূচনা করে এবং বিশজন সাংবাদিককে ফেলােশিপ প্রদান অনুষ্ঠান শেষে গুয়াহাটি মাধবদেব আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাগৃহের লনে এই প্রতিবেদকের কাছে ব্যক্তিগত আলােচনায় রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে আলােকপাত করে রাজ্যবাসীকে আস্বস্ত করে এ কথা জানিয়ে বলেন, রাজ্যের মানুষের স্বার্থ বিরােধী কোনও কাজই সরকার করবেনা।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রেস উপদেষ্টা হৃষীকেশ গােস্বামী, আইনী উপদেষ্টা শান্তনু ভরালী, এডিশনাল চিফ চেক্রেটারি এ. কে. সিং, কামরূপ মেট্রোর ডেপুটি কমিশনার বীরেন মিট্টাল প্রমুখদের উপস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সােনােয়াল এই অনুষ্ঠানে বলেন, রাজ্যে সরকার বরাক-ব্ৰহ্মপুত্ৰ উপত্যকাসহ ৩১ জেলার শান্তি সম্প্রীতি অক্ষুন্ন রাখার স্বার্থে সব কিছু করবে। গণতন্ত্রের ৪র্থ স্তম্ভ সমাজের প্রতি দায়িত্ব পালন করলে এই সমাজ কুলষিত হতে পারেনা। দুর্নীতিমুক্ত স্বচ্ছ প্রশাসন উপহার দেওয়া সম্ভব, মানবীয় শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ভালাে মানুষ হওয়ার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজস্থান সফরে যাওয়া সাংবাদিকদের সেই রাজ্যের বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখে অসমের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়তে উপযুক্ত ভূমিকা গ্রহণের জন্য আহ্বান জানান। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি প্রতিটি রাজ্যর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে শ্রেষ্ঠ সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তােলার পরামর্শ দিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী প্রেস উপদেষ্টা হৃষীকেশ গােস্বামী সাংবাদিকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা স্মরণ করে দিয়ে বলেন, সাংবাদিকদের আ্যন্টি ভাইরাস’হিসাবে কাজ করতে হবে। জনসংযােগ বিভাগের ডিরেক্টর রাজিব প্রকাশ বরুয়া বলেন, রাজ্যের ২০ জন সাংবাদিক রাজস্থান সফরে যাচ্ছেন তাদের মধ্যে ৬ জন মহিলা সাংবাদিক। সাংবাদিকদের বিভিন্ন কল্যাণমূলক কর্মসূচীর কথা জানিয়ে বলেন, রাজ্যের কর্তব্যরত সাংবাদিকদের চিকিৎসার জন্য ১ কোটি টাকার। করপাস ফাণ্ড’ গঠন করা হয়েছে। এই পর্যন্ত ১৫০ জন সাংবাদিকের চিকিৎসার জন্য ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত রাজ্যের ৩২ জন সাংবাদিকের নিকট আত্মিয়ের হাতে ৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়েছে। মিডিয়া ফেলােশিপের জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণার জন্য ৬৬ জন সাংবাদিক আবেদন করেছিলেন, ২০ জনকে নির্বাচন করা হয়। বিশিষ্ট সাংবাদিক অনুরাধা শৰ্মা পূজারির নেতৃত্বে ৪ সদস্যের এক বিচারক কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছিল। রাজ্যের জনসংযােগ বিভাগের কর্মীদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান আছে। তাদের সাহিত্য সৃষ্টি তুলে ধরার জন্য বছরে দুইটি করে ম্যাগাজিন প্রকাশের সিদ্ধান্ত হয়েছে। অন্তরঙ্গ’শীর্ষক প্রথম ম্যাগাজিনটি মুখ্যমন্ত্রী উন্মােচন করেন। এই প্রথম বরাক উপত্যকার সাংবাদিকদের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। রাজস্থান সফরে স্থান করে দেওয়া হয়েছে করিমগঞ্জ জেলার একমাত্র বাংলা দৈনিক নববার্তা প্রসঙ্গর বিশিষ্ট সাংবাদিক মৃণাল সরকার, কাছাড় জেলার বাংলা দৈনিক প্রান্তজ্যোতির সাংবাদিক রত্নদীপ দেব এবং কাছাড়ের বাংলা দৈনিক সাময়িক প্রসঙ্গ সাংবাদিক অনিন্দ ভটাচাৰ্য্য। আজকের অনুষ্ঠানে ধীরেন্দ্রনাথ বেজবরুয়া, লক্ষীনন্দন বরা, ধীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, বৈকুণ্ঠ গােস্বামী প্রমূখ বিশিষ্ট সাংবাদিক এবং জনসংযােগ বিভাগের অফিসাররা উপস্থিত ছিলেন।
0 comments: