প্রয়োজনে পৃথক বরাকের ডাক দেবঃ সফিক কামাল বড়লস্কর
গুয়াহাটি : পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি অসমের এন আর সি সম্পর্কে বিস্ফোরক অভিযোগের পর রাজ্যজুড়ে জাতীয়তাবাদী মহল ক্ষোভে ফেটে পড়ে। রাজ্যজুড়ে তার কুশপুতল দাহ, থানায় এজাহার, প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠে। এরইমধ্যে বরাক উপত্যকা তৃণমূল কংগ্রেস পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানাৰ্জির ৬৩তম জন্মদিন সাড়ম্বরে পালন করে। হাইলাকান্দি জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সফিক কামাল বড়লস্করে (সুকুর)র উদ্যোগে এই দিবস উদযাপন করা হয়।
মমতা ব্যানাজির বিরুদ্ধে রাজ্যবাসী যখন ক্ষোভে ফেটে পড়ছে, তখন রাজ্যের এক বৃহৎ সংখ্যক সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী মানুষ মমতার বিস্ফোরক মন্তব্যর প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছেন। রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সোনারুল শ্বাহ মোস্তাফা এবং রাজ্যিক তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের আহ্বায়ক তথা আইনজীবী আশ্রাফুল আরিফ সিকদার শনিবার এক যৌথ বিবৃতিতে তাদের দলনেত্রী মমতা ব্যানাৰ্জির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টের প্রত্যক্ষ তত্বাবধানে এন আর সির কাজ চললেও অসমের বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের কর্মচারিরাই সেই কাজ করছেন। বড় পরিতাপের বিষয় ভাষিক এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘু আধুষিত ১৩ টি জেলায় সেবা কেন্দ্রগুলির প্রায় ৯০ শতাংশ নথি পত্ৰ ভালোভাবে পরীক্ষা করেনি। বরাক উপত্যকায় মাত্র ৩৫ শতাংশ। নথিপত্র পরীক্ষা করা হয়েছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ আমেরিকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করা তার জামাতা এবং মেয়ের নাম এন আর সি তালিকায় উঠেছে। কিন্তু না উঠলে এন আর সি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের কবতেন বলে হুমকি দিয়েছেন। তাতে প্রমাণিত হয়, জনসাধারণের প্রতি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর দায়বদ্ধতা কতখানি। তৃণমূল নেতৃদ্বয় সুপ্রিম কোর্টের প্রতি পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করে বলেছেন, সুপ্রিম কোর্ট নিশ্চয় বৈষম্যমূলক কাজ করবে না।
এদিকে হাইলাকান্দি তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সফিক কামাল বড়লস্কর মমতা ব্যনার্জির এন আর সি সম্পৰ্কীয় মন্তব্যের পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে বলেছেন, বরাক উপত্যকার প্রতি বিজেপি সরকারের অবহেলা, অনাদর, বৈষম্য চলছেই। অসমীয়া জাতীয়তাবাদী শক্তি রাজ্যের ধর্মীয় এবং ভাষিক সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মৌলিক অধিকার ছিনিয়ে নিতে চাইছে। বরাকের প্রায় ৪০ লক্ষ হিন্দু-মুসলিম মানুষের রাজনৈতিক অধিকার সাব্যস্ত করার লক্ষ্যে যদি প্রয়ােজন হয় পৃথক বরাকের ডাক দিতে বাধ্য হবে। বর্তমান পরিস্থিতি সেই দিকেই যাচ্ছে। তিনি কংগ্রেসের প্রাক্তন মন্ত্রী সিদেক আহমেদের বক্তব্যকে সমর্থন জানান। সফিক কামাল দাবী করেন, শুধু তৃণমূল নয়, রাজ্যের লক্ষ লক্ষ সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মানুষ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে উৎফুল্লিত হয়েছে। তারা মনে করে এতদিন বাদে একজন অভিভাবক পেয়েছেন, যিনি রাজ্যের নিষ্পেষিত, অবহেলিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর পক্ষে সোচ্চার হলেন।
0 comments: